বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। সেখানে বাংলা থেকে সর্বোচ্চ আসন লাভ করে বিজেপিকে টাইট দিতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। তার মধ্যেই এবার রাজ্যসভা নির্বাচন নিয়ে সমীকরণের খেলাও শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী অগস্ট মাসে বাংলা থেকে রাজ্যসভার ৬টি আসন খালি হচ্ছে। গোয়ার প্রাক্তন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ পদ থেকে সম্প্রতি ইস্তফা দেন। সুতরাং সেটি যোগ করলে দাঁড়াচ্ছে ৭টি। বাংলা থেকে রাজ্যসভায় মোট ১৬টি আসনের মধ্যে ৭টি আসনে নির্বাচন হবে জুলাই মাসের শেষে। এমনকী ২০২৪ সালের ৩ এপ্রিল বাংলা থেকে রাজ্যসভায় আরও ৫টি আসন খালি হবে। সুতরাং ১০ মাসের মধ্যে ১২টি সাংসদ পদে নির্বাচন হবে। এই আবহে অনেকেই কলকাতায় ভিড় জমাতে শুরু করেছেন বলে সূত্রের খবর।
বিষয়টি ঠিক কী হচ্ছে? এবার সাতটি আসন খালি হচ্ছে দেখেই ভিন রাজ্যের অনেকের নজর পড়েছে কালীঘাটে। ইতিমধ্যেই বিজেপির প্রবীণ নেতা তথা বাজপেয়ী জমানার মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে রাজ্যসভায় প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আগেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে রাজ্যসভায় যেতে চান বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এবং জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা প্রাক্তন বিজেপি নেতা সত্যপাল মালিক। সুব্রহ্মণ্যম স্বামী কিছুদিন আগে কলকাতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন নবান্নে। আর সত্যপাল মালিক তাঁর আগ্রহের কথা দূত মারফত জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলে সূত্রের খবর। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? আগামী অগস্ট মাসে রাজ্যসভায় মেয়াদ শেষ হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের শান্তা ছেত্রী, সুস্মিতা দেব, ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায় এবং দোলা সেনের। কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্যেরও মেয়াদ শেষ হবে। আর ২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হবে তৃণমূল কংগ্রেসের শান্তনু সেন, আবিররঞ্জন বিশ্বাস, শুভাশিস চক্রবর্তী এবং নাদিমুল হকের। একইসঙ্গে কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিংভিরও মেয়াদ শেষ হবে। ২০২৪ সালে রাজ্যসভায় মেয়াদ শেষ হবে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চনের। উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির এখন বিধায়ক সংখ্যা অনেক কম। অথচ রাজ্যসভায় যেতে চান অনেকে। তাই সপা থেকে অমিতাভ পত্নীর পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা ক্ষীণ। তাই সপার পরিবর্তে তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে রাজ্যসভায় মনোনয়ন পাওয়ার আগ্রহ রয়েছে জয়া বচ্চনের বলে সূত্রের খবর।
তৃণমূল কংগ্রেস ঠিক কী করবে? রাজ্যসভায় যেতে আগ্রহী তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি ২০১২ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে রাজ্যসভায় মনোনীত হয়েছিলেন। বিশ্বজিৎ দেবও রাজ্যসভায় যেতে চান। তিনি মিজোরামের অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন। জুলাই মাসে যে ৭টি আসনে নির্বাচন হবে তাতে সংখ্যার জোরে একটি বিজেপি জিতবে। সেটাতে বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত পেতে পারেন। এছাড়া ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, দোলা সেন ও সুস্মিতা দেবের আবার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেক্ষেত্রে শান্তা ছেত্রী বাদ পড়তে পারেন। প্রদীপ ভট্টাচার্যের মেয়াদ শেষের পর ওই আসনটিও তৃণমূল কংগ্রেসের খাতায় যাবে। এই দুটি আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাদের দেবেন সেটাই দেখার।