কালীঘাটের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরেই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। কেউ হাউ হাউ করে কেঁদেছিলেন। কেউ আবার অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এই সব অভিযোগ এবং দাবির পর পালটা দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে শাকস শিবির। তাতে দেখা গিয়েছে, আন্দোলনকারীরা বৈঠকের আর্জি জানাচ্ছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে তখন বলতে শোনা যায়, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আজ আর বৈঠক সম্ভব না। তবে সেই ভিডিয়োতে কোথাও 'ঘার ধাক্কা' দিতে দেখা যায়নি কাউকেই। আর এই আবহে এবার ডাক্তারদের বিরুদ্ধেই পালটা তোপ দেগে 'জনতার দরবারে' তৃণমূল। এই আবহে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা সন্দীপন মিত্র একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন সেই ঘটনার। সেখানে তিনি ক্যাপশনে লিখেছেন, 'জুনিয়র ডাক্তাররা বললেন ওনাদের নাকি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। ভিডিয়োটা দেখে কি তাই মনে হচ্ছে?' (আরও পড়ুন: আরজি কর খুনের মামলায় সন্দীপ-অভিজিৎ গ্রেফতারির পর মুখ খুললেন কুণাল, বার্তা CBI-কে)
আরও পড়ুন: 'কান টানলে…', আরজি কর ধর্ষণ-খুন মামলায় সন্দীপ গ্রেফতার হতেই বিস্ফোরক চিকিৎসকরা
প্রসঙ্গত, বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরও চিকিৎসকরা আর্জি জানিয়েছিলেন, যাতে অন্তত ৩০ মিনিটের জন্যে হলেও বৈঠক হয়। আসলে কালও শুরু থেকেই শুরু হয়েছিল লাইভ নিয়ে জটিলতা। প্রথমে চিকিৎসকা লাইভ স্ট্রিমিংয়েরই দাবি জানান। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি হওয়ায় সেই দাবি মানা সম্ভব নয় বলে জানায় প্রশাসন। তবে ভিডিয়ো রেকর্ডিং হবে বলে জানানো হয়। তখন চিকিৎসকরা দাবি করেন, তাঁরাও যেন রেকর্ডিং করতে পারেন। তবে তাতেও সায় ছিল না প্রশাসনের। এমনকী সরকারের ভিডিয়ো করার ক্ষেত্রে ডাক্তারদের প্রতিনিধিদের থাকাতেও আপত্তি ছিল। এবং গতকাল বৈঠক শেষের পরই সেই ভিডিয়ো ডাক্তারদের হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করেন মমতা। তবে মুখ্যমন্ত্রী তখন দাবি করেছিলেন, বৈঠকের মিনিটস রাখা হবে। বৈঠক শেষে দুই পক্ষই তাতে সই করে দেবে। দীর্ঘ টালবাহানা এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনার পরে তাতেই রাজি হয়ে যান ডাক্তাররা। তবে সেই কথা জানাতে গেলে ডাক্তারদের ফিরে যেতে বলা হয়।
আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় কার্যত ভেঙে পড়েন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের দাবি, রাজ্য সরকার বলছে তাঁরা দুঘণ্টা অপেক্ষা করেছে, তাই 'ম্যাডাম' এখন আর বৈঠক করতে পারবেন না। কিন্তু আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা ৩৫ দিন ধরে অপেক্ষা করছেন। বৃষ্টিতে ভিজে তাঁরা কালীঘাটের সামনেও অপেক্ষা করেছে কয়েক ঘণ্টা। শেষ পর্যন্ত চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের কাছে চিকিৎসকরা আর্তি রাখেন, অন্তত ৩০ মিনিট বৈঠক করার জন্যে। তবে তাতেও রাজি হয়নি প্রশাসন। পরে অবশ্য চিকিৎসকরা ধরনামঞ্চে ফিরে এসে সরকারকে পালটা তোপ দেগে প্রশ্ন তোলে, টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারির খবর কানে পৌঁছাতেই কি বৈঠক করা হল না? এদিকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই গোটা পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে তৃণমূল। গতকাল মমতার ধরনামঞ্চে যাওয়ায় তৃণমূল যতটা 'তরতাজা' হয়ে উঠেছিল, শেষ রাতে তা ফের যেন উধাও। এই আবহে পালটা ডাক্তার এবং চন্দ্রিমাদের কথোপকথনের ভিডিয়ো প্রকাশ করে ডাক্তারদের বিরুদ্ধেই তোপ দেগে জনমত তৈরির চেষ্টায় তৃণমূল কংগ্রেস।