রাজনীতি থেকে সমস্ত অব্যাহতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন মধ্য হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্লা। জেলা তৃণমূল সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে দলীয় স্তরে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করতে চেয়ে তিনি সুব্রত বক্সিকে চিঠি দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তকে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাগত জানালেও অন্য সুর তাঁর দলের নেতাদের গলায়।
লক্ষ্মীরতনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘ভোটের দুই–তিনমাস আগে দলের দেওয়া দায়িত্ব ত্যাগ করেছেন তিনি। বাকিটা মানুষ দেখবেন।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘ক্রীড়া জগতের তারকা লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে যথেষ্ট সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁকে বিধায়ক করা হয়েছে, মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়েছে। আর কত দেবে? কী চায় এঁরা?’
রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তিনি কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন আমি জানি না। অনেক দিন ধরে ওঁর সঙ্গে আমার কোনও আলাপ–আলোচনাও হয়নি। কেন হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত নিলেন তা একমাত্র লক্ষ্মীই বলতে পারবেন।’
লক্ষ্মী পদত্যাগপত্র তুলে নিক। দলে তাঁর প্রয়োজন আছে বলেই এদিন জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি এদিন লক্ষ্মীরতন শুক্লার উদ্দেশে বলেন, ‘লক্ষ্মী তুমি ভীষণ ভাল ছেলে। তুমি ফিরে এসো। দলে তোমার প্রয়োজন আছে। বাকি সব কথা বলে মিটিয়ে নেওয়া যাবে। তুমি মন্ত্রিত্ব ছেড় না।’
সৌগত রায়ের কথায়, ‘লক্ষ্মীর কোনও ক্ষোভ আছে বলে আমি জানতাম না। লক্ষ্মী ভাল খেলোয়ার। ভাল ছেলে। ভাল মন্ত্রী ছিল। ওকে সবাই পছন্দ করত। ওদের জেলা রাজনীতির ব্যাপারে আমি জানি না। তবে আমার এখনও মনে হয় ওকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা দরকার। যদিও মন্ত্রিসভার ব্যাপারটা মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করবেন। আমি আবেদন করব যে লক্ষ্মী পদত্যাগপত্র তুলে নিক। লক্ষ্মী যদি দল ছেড়ে দেয় তবে তা দলের প্রতি ধাক্কা তো বটেই।’
হাওড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘এটা লক্ষ্মীর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এখন দল সিদ্ধান্ত নেবে।’ কিন্তু দলের অন্দরমহলে শোনা যায়, অরূপ রায় ও লক্ষ্মীরতন শুক্লার মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। লক্ষ্মীরতনকে কাজ করতে না দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে। যদিও এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অরূপ রায়। তাঁর কথায়, ‘এই ধরণের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। লক্ষ্মী আমার ছোট ভাইয়ের মতো। তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক।’