শান্তনু সেনের উপর কোপ পড়েই চলেছে। তিনি নিজে একজন চিকিৎসক। তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে রাজ্যসভায় সাংসদ ছিলেন। কিন্তু আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় মুখ খোলার পর থেকেই পরিস্থিতি তাঁর বিপরীতে যেতে শুরু করেছে। তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সাসপেন্ড করা হয়। দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আর এবার সরকারি পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল সাসপেন্ডেড চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেনকে। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে ছিলেন শান্তনু সেন। তাঁকে সরিয়ে এখন অসীম সরকারকে প্রতিনিধি করা হল। তবে এত কিছুর পরও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি সম্মান দিয়েছেন।
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে খুন করে ধর্ষণ করার ঘটনায় যখন রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় তখন শান্তনুর অবস্থান এবং মন্তব্য দলকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। এমনকী ‘মেয়েদের রাত দখল’ কর্মসূচিকে সমর্থন করেন শান্তনু সেন। তাঁর স্ত্রীকেও দেখা যায় আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়াতে। হাসপাতাল প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন শান্তনু সেন। যা নিয়ে জলঘোলা হয়। তখনই দলের মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শান্তনু সেনকে। একাধিক হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতিতে তাঁকে রাখা হয়নি।
আরও পড়ুন: শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে স্যালাইনে মিলল ছত্রাক, অপারেশন থিয়েটারে আলোড়ন
শান্তনু সেনের উপর একের পর এক কোপ যখন পড়ছিল তখন তা নিয়ে বেশ চর্চাও শুরু হয়েছিল। সেই চর্চার পর বিষয়টি থেমে যাবে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল, সেটা থামেনি। দল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পরও তা জারি আছে। সাসপেন্ড হওয়ার পর শান্তনু সেন বলেছিলেন, কোন দলবিরোধী কাজ করেছেন তিনি সেটা বুঝতে পারছেন না। তবে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে তাঁর মন্তব্যের প্রভাবে এমন পদক্ষেপ বলে মনে করেন না তিনি। কিন্তু আজ, বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে যা হল সেটা নিয়েও খুব কিছু বলেননি শান্তনু সেন। শুধু সংবাদমাধ্যমে একটি বাক্য বলেন, ‘দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত শিরোধার্য।’
তবে সাসপেন্ড হওয়ার পর শান্তনু সেন ডায়মন্ডহারবারের ‘সেবাশ্রয়’ কর্মসূচিতে যুক্ত ছিলেন। তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের নেতা বলেই পরিচিত। সেখানেও নিজের কাজ দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দেন। আর এই ‘সেবাশ্রয়’ কর্মসূচিতে জড়িত থাকার জেরেই তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ সেখানেও প্রশাসনের একটি বড় অংশ রয়েছে। শান্তনু সেন দলকে কিছু না জানিয়ে দলের দেওয়া পদ ব্যবহার করে এমন একটি কর্মসূচির জন্য চিকিৎসকদের এক জায়গায় এনেছেন বলেও কোপ পড়ে থাকতে পারে। তবে কোন কাজের জন্য শান্তনুকে সরকারি পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল সেটা অজানা তাঁরও।