রাজ্যপালের ডানা ছাঁটতে এবার উঠেপড়ে লেগেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই বিধানসভার সচিবালয় বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে। আবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে সরিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি গিয়েছে দিল্লিতে। সুতরাং নতুন সরকার আসীন হতে না হতেই রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সংঘাত বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সংবিধানে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অবকাশ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রতিবাদপত্র দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ‘সাবস্টেনটিভ মোশন’ বা প্রস্তাব আনার কথা ভাবছে তৃণমূল কংগ্রেস। ওই প্রস্তাবটি লোকসভা বা রাজ্যসভায় যে কোনও সাংসদ আনতে পারেন। গৃহীত হলে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে। এই প্রস্তাবের উল্লেখ রয়েছে রাজ্যসভা–লোকসভার রুলবুকে। এই কথাই জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়।
এছাড়া রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সংসদে ‘ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব’ আনার কথাও ভাবা হচ্ছে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ করা যেতে পারে। দেশের সংবিধানে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ‘ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব’ আনার ব্যবস্থা রয়েছে। নিয়মানুসারে ওই প্রস্তাবও লোকসভা বা রাজ্যসভা— সংসদের যে কোনও কক্ষেই আনা যেতে পারে। উল্লেখ্য, রাজস্থানের রাজ্যপাল কল্যাণ সিংয়ের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক ব্যবস্থার মধ্যে ‘সাবস্টেনটিভ মোশন’ আনা হয়েছিল। কল্যাণের একটি মন্তব্যের বিরুদ্ধে ওই প্রস্তাব নিয়েছিলেন সুখেন্দুশেখরই। প্রস্তাব আনা হলেও সংসদে আলোচনা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা হলেও তা নিয়ে আলোচনা হবে কি না, সেটা লোকসভার স্পিকার বা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানই ঠিক করবেন।
এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘যে সব সাংবিধানিক সংস্থা রয়েছে, সেগুলিকে বলা হয় কনস্টিটিউশনাল অথরিটি। রাজ্যপাল পদটি একটি কনস্টিটিউশনাল অথরিটি। সংবিধান এই কনস্টিটিউশনাল অথরিটির হাতে বহু ক্ষমতা দিয়েছে। তবে তা দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। জনসাধারণের কল্যাণের জন্য ওই ক্ষমতাগুলির ব্যবহার করতে হবে। অপব্যবহার করার জন্য নয়। আমি রাজ্যপাল বলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আমাকে যা খুশি করার অধিকার দেয়নি। আমি সবকিছুর ঊর্ধ্বে, ব্যাপারটা এমন নয়। আইন ও সংবিধান সবকিছুর ঊর্ধ্বে। তাই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক পদক্ষেপ করাই যায়।’