মাঝরাতে দূতাবাসের গাড়ি শহরের বুকে বেপরোয়াভাবে তাণ্ডব দেখাবে তা কেউ কল্পনা করতে পারেনি। কিন্তু সাদা হন্ডা সিটি গাড়িটি ডিপ্লোম্যাটিক নম্বরপ্লেট নিয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। সায়েন্স সিটি থেকে গাড়িটি আসছিল। আর পার্ক সার্কাসের দিকে এসেই বেপরোয়া গতিতে ছুটল সেডান গাড়ি। আর গতির তীব্রতায় পার্ক সার্কাস ৪ নম্বর উড়ালপুল থেকে নামার সময় ওই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পরপর চারটি মোটরবাইকে ধাক্কা মারল। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন চালক। পুলিশ তখন গার্ডরেল দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু চালক গতি বাড়িয়ে গার্ডরেল ভেঙে বেরিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
এই ঘটনার খবর যায় কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে। সেখান থেকে তা পৌঁছয় লালবাজারে। শনিবার মাঝরাতে এই ঘটনাটি ঘটে কড়েয়া থানা এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, মার্কিন মুলুকের দূতাবাসের নামে নথিভুক্ত আছে গাড়িটি। তপসিয়া পার করার পর গাড়িটি গতির প্রতিযোগিতায় নেমেছিল। আর একটি গাড়িটির সঙ্গে চলছিল গতির প্রতিযোগিতা। তবে সেতু পার করে অন্য গাড়িটি র্যাম্প ধরে নেমে যায়। আর নিয়ন্ত্রণ হারায় দূতাবাসের গাড়ি। তখনই পর পর চারটি মোটরবাইকে ধাক্কা মেরে গাড়ি বেরিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে আসে রাতের শহরে টহলদারির পিসিআর ভ্যান। ইস্ট ট্রাফিক গার্ড এবং কড়েয়া থানার পুলিশ এসে পৌঁছয়। আহদের চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে বাস–মিনিবাসের ভাড়া বৃদ্ধি করা হোক, পরিবহণমন্ত্রীকে ফের চিঠি বাসমালিক সংগঠনের
ওই গাড়িকে ধরার জন্য তখন তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু গাড়ির গতি তীব্র থাকায় তা সামাল দিতে ইস্ট ট্রাফিক গার্ডের অফিসাররা দু’টি গার্ডরেল দিয়ে গাড়িটি আটকানোর চেষ্টা করেন। চালক সেটা দেখতে পেয়ে গাড়ির গতি আরও বাড়িয়ে দেয়। আর গার্ডরেল ভেঙে এগিয়ে যায় ওই দূতাবাসের গাড়ি বলে অভিযোগ। এটা দেখে তাজ্জব বনে যান অফিসাররা। গার্ডরেল ভাঙার সাহস কেউ দেখায় না। এক্ষেত্রে তাও ঘটল। ওই গার্ডরেল ছিটকে গিয়ে পড়ে। তাতে দু’জন পথচারী আহত হন বলে সূত্রের খবর। গাড়িটির পিছনে ধাওয়া করেও পুলিশ তা ধরতে পারেনি। কারণ তীব্র গতিতে দূতাবাসের ওই গাড়ি এজেসি বোস রোডের দিকে চলে যায়।
এই ঘটনায় তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে শহরে। পুলিশের কপালেও চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। দূতাবাসের নম্বর প্লেট লাগানো গাড়ি বলে কি আইন মানবে না? এভাবে ট্রাফিক আইন ভেঙে বেরিয়ে যাওয়া অপরাধের। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই গাড়িটি তখন ধরতে না পারলেও পথের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গাড়ির চালককে চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে। ইউরোপের একটি দেশের দূতাবাসের গাড়ি বলে তথ্য উঠে এসেছে। এবার সেটাকে পাকড়াও করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে পুলিশের উচ্চপদস্থ কেউ কোনও জবাব দেননি।