কলকাতার ঐতিহ্য ট্রাম। তবে পরিবহণ ব্যবস্থা যত উন্নত হয়েছে, ট্রামের প্রয়োজনীয়তাও ক্রমশ কমছে। তাই ধাপে ধাপে ট্রাম পরিষেবা ক্রমশ তুলে নেওয়ার পথে হাঁটছে পরিবহণ দফতর। এর অন্য একটি কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, দুর্ঘটনা। পথ দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাম পরিষেবা সীমিত করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে শহরের মাত্র দু'টি রুটে ট্রাম চালানো হবে। এই দুটি রুট হল খিদিরপুর-ধর্মতলা ও ধর্মতলা-শ্যামবাজার।
পরিবেশবান্ধব এই পরিবহণ পরিষেবা বন্ধের বিরুদ্ধে নানা সময়, অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সরব হয়েছে। কলকাতা শহরের এই ঐতিহ্যকে নানা ভাবে বাঁচিয়ে রাখতে নানা উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। কখন কাফে, কখনও মিউজিয়াম তৈরি করে পর্যটকদের আকর্ষণ করা হয়েছে। মেট্রো রুটের সম্প্রসারণ একে প্রতিযোগিতার মুখে ফেলে দিয়েছে।
পরিবহণ দফতর ও কলকাতা পুলিশের যুক্তি হল, পথ দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাম পরিষেবা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের দাবি, এই শহর ট্রাম চলাচলের উপযুক্ত নয়। শহরে যানজটে কারণ হয়ে উঠছে ট্রাম। বাড়ছে দুর্ঘটনা। সে কারণেই পরিষেবা গুটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। কলকাতার স্মারক হিসাবে ওই দুটি রুটে ট্রাম চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে রাস্তাগুলিতে ট্রামলাইন ছিল সেগুলি পিচ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ১৮৭৩ সালে কলকাতার বুকে প্রথম ট্রাম চলে। ২৪ ফেব্রুয়ারি ঘোড়ায় টানা ট্রাম গিয়েছিল শিয়ালদহ থেকে আর্মেনিয়ান ঘাট পর্যন্ত। ১৯০২ সালে নতুন রূপে শহরের বুকে চলতে শুরু করে বিদ্যুৎ চালিত ট্রাম। ধর্মতলা থেকে খিদিরপুর রুটে প্রথম বিদ্যুৎচালিত ট্রাম চলতে শুরু করে। একেই হেরিটেজ রুট করে ট্রাম চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ টানতে ধর্মতলা থেকে ভিক্টোরিয়া পর্যন্ত ট্রাম চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভিক্টোরিয়ার সমানে ট্যুরিস্ট প্ল্যাটফর্মও তৈরি করা হচ্ছে।