রেষারেষি অথবা বেপরোয়া বাস নিয়ন্ত্রণে এবার আরও কঠোর পদক্ষেপ করতে চলেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। এ নিয়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওরের (এসওপি) একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। তাতে দুর্ঘটনা রুখতে বিভিন্ন ধরনের নিয়মের কথা বলা রয়েছে। পাশাপাশি যাত্রীদের সুরক্ষা এবং বাস চালক, কন্ডাক্টররা কী করবেন না করবনে না সেই কথাও বলা রয়েছে। যদিও এসওপি কবে প্রকাশ করা হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে জানানো হয়নি। তবে এই এসওপি প্রকাশ করার আগে বাস মালিক, পরিবহণ বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ মানুষের মতামত নিতে চাই দফতর। বেসরকারি বাস মালিকদের একাংশ এর বিরোধিতা করেছে।
আরও পড়ুন: সরকারি বাসেও কমিশন প্রথায় মাইনে হয়, বিকল্প ব্যবস্থা কই? প্রশ্ন মালিকদের
এসওপিতে যাত্রী তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নিয়মের কথা বলা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বলা হয়েছে, যেখানে সেখানে বাস দাঁড়াতে পারবেনা। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডে দাঁড়াতে পারবে এবং তার ৩০ মিটারের বেশি দূরে দাঁড়াতে পারবে না। কোনও বাসস্ট্যান্ডে এক মিনিটের বেশি দাঁড়ানো যাবে না। প্রসঙ্গত, যাত্রী তোলার জন্য কোনও কোনও বাস দীর্ঘ সময় ধরে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে। এর ফলে সেই প্রবণতা কমবে। তাছাড়া যত্রতত্র যাত্রী তোলার প্রবণতাও কমবে। আরও বলা হয়েছে, এই নির্দেশ অমান্য করলে বাস চালক এবং কন্ডাক্টরদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। তাদের জরিমানা করা হতে পারে।
এছাড়া বাস চালক, কন্ডাক্টারদের কী করণীয় সে বিষয়েও স্পষ্ট জানানো হয়েছে। পাশাপাশি তাদের ইউনিফর্ম চালু করতে চায় পরিবহণ দফতর। কমিশন প্রথার বিকল্প কি হতে পারে তা নিয়েও ভাবতে বলা হয়েছে মালিকদের। আরও বলা হয়েছে টাইম টেবিল মেনে চলতে হবে। এবিষয়ে মালিকদের উদ্যোগী হতে হবে। তাছাড়া কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে সেই বিষয়ে চালক বা কন্ডাক্টর যাতে থানায় ফোন করে জানান সে বিষয়টিও এসওপিতে উল্লেখ করা হয়েছে। চালক ও কন্ডাক্টরদের নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের অতীতের কাজের অভিজ্ঞতা বা কোনও অভিযোগ রয়েছে কিনা তা মালিকদের খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
এদিকে, প্রতিটি বাস চালক এবং কন্ডাক্টরদের তাদের লাইসেন্সের কপি বাসে আটকে রাখতে বলা হয়েছে, যাতে তা সহজেই যাত্রীদের নজরে আসে। এর সঙ্গে সরকার স্বীকৃত ভাড়ার চার্ট রাখতে বলা হয়েছে। তাতে ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কন্ডাক্টরদের বচসা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। এসওপিতে আরও বলা হয়েছে, তিন বছর অন্তর অন্তর চালক, কন্ডাক্টরদের ৭ থেকে ১৫ দিনের রিফ্রেশার কোর্স করাতে হবে। তাতে ট্রাফিক আইন থেকে শুরু করে যাত্রীদের সঙ্গে ব্যবহার প্রভৃতি শেখানো হবে। এ বিষয়ে মালিকদের উদ্যোগী হতে হবে। তবে এর বিরোধিতা করেছেন বাস মালিকরা। তাদের বক্তব্য, এতে চালক এবং কন্ডাক্টরদের সুরক্ষার কথা বলা নেই।