কখনও রকেটের গতিতে বাস ছোটানো, কখনও বেরুটে ঢুকে যাওয়া, কখনও আবার যেখানে-সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রীদের ওঠা-নামা করানো - আপাতত সরকারি বাসের ক্ষেত্রে এই সমস্ত অনিয়ম চিরতরে বন্ধ করতে চাইছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। আনা হচ্ছে নয়া মোবাইল অ্যাপ।
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে উদ্ধৃত করে এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়েছে, সর্বত্রই বাসের বেপরোয়া গতি রুখতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার। তাতে যাত্রী নিরাপত্তা যেমন আরও জোরদার হবে, তেমনই পথ দুর্ঘটনাতেও বহুলাংশে রাশ টানা সম্ভব হবে।
এর জন্যই সর্বক্ষণ যাত্রীবাহী বাসের উপর প্রযুক্তির সাহায্যে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সবকিছু পরিকল্পনা অনুসারে এগোলে আগামী মার্চ মাস থেকেই রাজ্যের সরকারি বাসগুলির উপর অ্যাপের মাধ্যমে নজরদারি চালানো ব্যবস্থাপনা চালু হয়ে যাবে। এবং ভবিষ্যতে বেসরকারি বাসগুলিকেও একই ব্যবস্থাপনার আওতায় নিয়ে আসা হবে। গোটা প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে কার্যকর করা হবে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
কীভাবে কাজ করবে এই নয়া মোবাইল অ্য়াপ?
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অ্যাপ চালু হলে প্রত্যেক বাসচালককেই বাসে ওঠার আগে নিজস্ব আইডি-র সাহায্যে লগ ইন করতে হবে। আর তাহলেই সরাসরি পরিবহণ দফতরের কন্ট্রোল রুম থেকে বাসের উপর নজরদারি চালানো সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্ট চালক যে বাসটি চালাচ্ছেন, তার গতিবেগ কত, সেটি কোন রুটে যাচ্ছে, কোথায় কোথায় কতক্ষণ ধরে থামছে - এই সমস্ত কিছু অ্যাপের মাধ্যমে জেনে যাবেন পরিবহণ দফতরের কর্মী ও আধিকারিকরা।
এক্ষেত্রে যদি দেখা যায়, ওই বাসচালক কোনও অনিয়ম করছেন, তাহলে তাঁকে সতর্ক করে তাঁর মোবাইলে প্রথমে এসএমএস পাঠানো হবে। কোনও চালক যদি একই ভুল বা অনিয়ম একাধিকবার করেন, তাহলে তাঁকে শোকজ করা হবে। তবে, কেউ যদি তিনবারের বেশি নিয়ম ভাঙেন, তাহলে সেই বাসটালকের লাইসেন্স তিনমাসের জন্য 'ব্লক' করে দেওয়া হতে পারে। যদিও নিয়ম ভঙ্গকারী বাসচালকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করার বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
তাছাড়া, এই নয়া মোবাইল অ্যাপ চালু করার আগে বাসচালকদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। তাঁরা যাতে নিয়ম ভেঙে কোনও শাস্তির মুখে না পড়েন, তাও তাঁদের বোঝানো হবে।