পরিবহণ দফতরের আয় ভালই হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সেই আয় অসাধু উপায়ে কেউ বা কারা তা সরিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ। এই আবহে বিকল্প পথ খোঁজা শুরু হয়। তাই পরিবহণ দফতরের একাধিক কার্যালয়ে পরিষেবা বিষয়ক কাজে স্বচ্ছতা আনা হচ্ছে। এমনকী এই স্বচ্ছতা দ্রুত গতিতে নিয়ে আসতে এবার ২০ দফা নির্দেশ জারি করেছেন পরিবহণ দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহন। এবার থেকে যাবতীয় লেনদেন অনলাইনে করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে বলে খবর। সুতরাং এই পদ্ধতির মাধ্যমেই দালালরাজ রোখার কাজ করতে চলেছে পরিবহণ দফতর বলে জানা যাচ্ছে।
রাজপথে গাড়ি চালাতে লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়। আবার গাড়ি নথিভুক্ত করা থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক গাড়ির পারমিটের কাজ, গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা, গাড়ি নিয়ে ব্যবসার অনুমতি, দূষণ ও মোটর ট্রেনিং স্কুলগুলিকে অনুমতি প্রদান–সহ নানা কাজের জন্য নাগরিকদের পরিবহণ দফতরে আসতে হয়। দফতরের এইসব কাজে স্বচ্ছতা আনতে ১৩৪টি পরিষেবা অনলাইনে রাখা হচ্ছে। বাহন–৪ এবং সারথি–৪ পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করা যায়। কিন্তু দালাল চক্র সক্রিয় এখন আছে বলে জানাচ্ছেন পরিবহণ দফতরের অফিসাররা। সেটা ঠেকাতেই পরিবহণসচিব এই নিয়ে নির্দেশিকা দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: পাঞ্চেত–মাইথন জলাধার থেকে জল ছাড়া হল, বানভাসী পরিস্থিতিতে খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ মমতার
নয়া নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, পরিবহণ দফতরের অফিসাররা সচিত্র পরিচয়পত্র গলায় ঝোলাবেন। যাঁদের ইউনিফর্ম পরে কাজ করার কথা সেটা করতে হবে। এটা করার কারণ যাঁরা পরিবহণ দফতরে আসবেন তাঁরা যাতে বুঝতে পারেন এই অফিসারদের নাম এবং কী কাজ করেন। একাধিক আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরে আসা মানুষজন পরিষেবার তালিকা দেখে জানতে পারবেন পরিষেবার কথা। কোথায় কোন বিভাগ রয়েছে বা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসাররা কে কোথায় বসেন তার জন্য দফতরের প্রবেশপথে মানচিত্র বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পৃথক বোর্ড এবং হেল্পডেস্ক খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পরিবহণ দফতরে সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া আর্থিক লেনদেন অনলাইনে সারার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্র্যাকিং পদ্ধতি চালু করার কথা বলা হয়েছে। যাতে ফাইল ট্র্যাক করা যায়। কেউ কোনও নথি বা পরিষেবার জন্য আবেদন জানালে ওই ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় রসিদ দেওয়া হবে। আর ওই আবেদন করার জন্য নির্দিষ্ট ডকেট নম্বর তৈরি করার নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে। পরিষেবার কাজ নির্দিষ্ট সময়সীমা ধরে করতে বলা হয়েছে। আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের বৈঠক ডেকে বকেয়া কাজ মেটানোর বিষয়টি দেখতে হবে। পরিষেবার কাজ পড়ে থাকছে কিনা সেটা নিয়মিত জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের অফিসারদের খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন সচিব।