কদিন আগের কথা। নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবহণ দফতরকে ‘সাইলেন্ট ডিপার্টমেন্ট’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। কারণ রাজপথে সাধারণ মানুষকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কষ্ট হয়েছিল তাঁর। বাসের অপেক্ষায় সাধারণ মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাই রাস্তায় কোনওভাবেই যাত্রী হয়রানি বরদাস্ত করা হবে না বলে বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর মুখ্যমন্ত্রীর কড়া ধমকের পর পরিবহণ দফতর ‘সাউন্ড’ করতে শুরু করল। আর তাই এবার বৈঠক করে যাত্রী সুবিধা অনুযায়ী বাস পরিষেবার নির্দেশ দিলেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
আজ, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই বাস সার্ভিস বাড়ানোর জন্য ডিপো ম্যানেজার, ট্রাফিক ম্যানেজার–সহ ডব্লিউবিটিসি, সিএটিসি, সিটিসি, সার্ফেসের অফিসারদের নিয়ে ময়দান টেন্টে বৈঠক করলেন বিভাগীয় মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং দফতরের সচিব ড. সৌমিত্র মোহন। আজকের বৈঠকে কেমন করে বাসের ট্রিপ আরও বাড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মানুষ যাতে ঠায় বাসের অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে না থাকে তার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন মন্ত্রী। আর শহর কলকাতায় দেখা যায় রেষারেষি করার জেরে নির্ধারিত বাসস্টপেও বাস দাঁড়ায় না। সেটা নিয়েও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শহরের নিরাপত্তায় দু’হাজারের বেশি পুলিশ, সাধারণতন্ত্র দিবসে নিশ্ছিদ্র করছে লালবাজার
এই রেষারেষি না করার জন্য প্রত্যেকটি স্টপেজ থেকে যাত্রী তুলতে হবে বলে চালকদের নির্দেশ দিলেন পরিবহণ মন্ত্রী। আর কোনওভাবেই রেষারেষি করে চলা যাবে না। বাসের গতিও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে। এমনকী শহরের বুকে অযাচিত পথ দুর্ঘটনা একদম কাম্য নয় বলে আজ জানিয়ে দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী। যেসব রুটে যাত্রী বেশি থাকে সেই সব জায়গায় বাড়তি বাস চালানো নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অফিসটাইমে এবং বিশেষ ছুটির দিন মানুষকে ঘন ঘন পরিষেবা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যেমন একদিন পর সাধারণতন্ত্র দিবস। সেদিন মানুষজন নানা জায়গায় ঘুরতে যান। তাই বাস পরিষেবা বেশি করে দিতে হবে।
পরিবহণ মন্ত্রীর কাছে নানা অভিযোগও জমা পড়েছিল। তার ভিত্তিতে ওই বৈঠক কিছু কথা বলেন তিনি। পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী সকলকে বলেন, ‘অনেক সময় অভিযোগ আসে যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার। এখন থেকে যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা যাবে না। মেট্রো লাইনগুলিকে লক্ষ্য রেখে বাসের অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তনের প্রস্তাব গড়ে তুলতে হবে। সবমিলিয়ে বাস সার্ভিসকে হতে হবে যাত্রীকেন্দ্রিক। যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে পরিষেবা দিতে হবে। আর চালক ও কন্ডাক্টরদের নিয়ে কাউন্সেলিং করা হবে।’