শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই দলের শো-কজের মুখে পড়লেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির। সঙ্গে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীকেও তাঁর বক্তব্যের জন্য সতর্ক করেছে তৃণমূল। যার ফলে শুভেন্দুর ‘চ্যাংদোলা’ মন্তব্য নতুন মাত্রা পেল বলে মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাঁর মন্তব্যের জন্য হুমায়ুনকে শো-কজ করেছে তৃণমূলের বিধানসভার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিধানসভার বাইরে হুমায়ুন বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী জাতিগত আক্রমণ করছে কেন প্রশাসন স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করছে না? পুলিশ কি নাকে ঠুসি দিয়ে আছে? আমাকে কেন আমার জাতির জন্য এত চিৎকার করতে হয়? কেন এখানে আইনশৃঙ্খলা সমস্যা তৈরি করছে, গোটা একটা মুসলিম জাতিকে আক্রমণ করছে? পুলিশ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না? ব্যর্থতার কথা আমি বলব না। পুলিশ নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে?’
হুমায়ুন আরও বলেন, ‘গোটা মুসলিম সমাজকে এভাবে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করা বন্ধ না করলে, বা যে কথা বলেছে মঙ্গলবার সেই কথা যদি প্রত্যাহার না করে মুর্শিদাবাদে ওনাকে পাঠিয়ে দেন, আগে থেকে যেন আপনাদের জানিয়ে দেয় কখন যাচ্ছেন, তার পর আমি আমার ভূমিকা দেখাব। ঘিরে রেখে দেব। ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করলে তবে ছাড়ব। হিম্মত থাকলে ফিরুক না। উনি বলছে তো ওনার কেশাগ্র স্পর্শ করলে এই করব, ওই করব। আগে একটা বিধায়ককে চ্যাংদোলা করে দেখান না। কত হিম্মত দেখব।’
এর পরই ভরতপুরের বিধায়ক ঘোষণা করেন, ‘আমার জাতিকে আক্রমণ করবে আমি বলব না? আমার কাছে আগে দল না, আগে আমার জাতি। আপনি লিখে নিন, আমি অত পরোয়া করি না। আমার জাতিকে আক্রমণ করবে আর আমি শুভেন্দুকে ছেড়ে দেব? কোনও মতেই ছাড়ব না। প্রত্যাহার করতে হবে, নইলে মুর্শিদাবাদে যেতে দিন। দেখাব মুর্শিদাবাদে হুমায়ুন কবির স্পটে না থেকেও শুভেন্দু অধিকারীর কী অবস্থা হয়।’
তৃণমূলের এই পদক্ষেপকে কটাক্ষ করে বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা শংকর ঘোষ বলেন, ‘হুমায়ুন যখন হিন্দুদের কেটে ভাগিরথীতে ভাসিয়ে দেব বলেছিলেন সেজন্য তো তৃণমূল তাঁকে আজ পর্যন্ত শো কজ করেনি। আজ যেই দলের থেকে জাত বড় বলেছেন ওমনি শো কজ করা হল। এর থেকে বোঝা যায় তৃণমূলের কাছে হিন্দু প্রাণ ও সম্পত্তির মূল্য ঠিক কতখানি। আর তৃণমূলের প্রত্যেকের কাছেই দল সবার শেষে। কারও কাছে দলের থেকে টাকা আগে, কারও কাছে দলের থেকে জাত আগে, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দলের থেকে ক্ষমতা আগে। তাহলে তাদেরও সবাইকে শো কজ করতে হয়।’