যাবতীয় জল্পনার অবসান, চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেন ও তাজা নেতা আরাবুল ইসলামকে দল থেকে সাসপেন্ড করল তৃণমূল। শুক্রবার সন্ধ্যায় দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। দলবিরোধী কাজের জন্য তাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে কতদিনের জন্য তাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে তা জানা যায়নি।
শান্তনু সেন ও আরাবুল ইসলাম ২ জনের সঙ্গেই তৃণমূলের বেশ কিছুদিন ধরে টানাপোড়েন চলছিল। রাজ্যসভার সাংসদের মেয়াদ শেষের পরে শান্তনুকে আর টিকিট দেয়নি তৃণমূল। এর পর লোকসভা নির্বাচনে দলের টিকিটের আশায় ছিলেন তিনি। কিন্তু শিকে ছেঁড়েনি। শেষে বরাহনগর বিধানসভা উপ নির্বাচনেও টিকিট পাননি উত্তর কলকাতার এই চিকিৎসক নেতা। উলটে আরজি কর কাণ্ডের সময় সেখানে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন তিনি। মুখ খোলেন শান্তনুবাবুর স্ত্রী কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর কাকলি সেনও। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পথেও নামেন তাঁরা। তাতে অস্বস্তিতে পড়ে দল।
সম্প্রতি ডায়মন্ড হারবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চিকিৎসক সম্মেলনে উদ্যোক্তা হিসাবে নাম ছিল শান্তনুবাবুর। পরে সেখান থেকে নাম বাদ যায় তাঁর। এর মধ্যে ডিসেম্বর মাসে টানা সপ্তম বারের জন্য IMAএর সভাপতি নির্বাচিত হন শান্তনুবাবু। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মমতার অপছন্দের তালিকায় নাম উঠে যাওয়াতেই সাসপেন্ড হতে হয়েছে তাঁকে।
আরাবুল ইসলামের ক্ষেত্রে সমীকরণটা অনেক সহজ। রাজনৈতিক মহলের মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নে ISF কর্মীর খুনের মামলায় আরাবুলের গ্রেফতারির দিনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল তৃণমূলে তাঁর ইনিংস শেষ। মূলত লোকসভা নির্বাচনে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কায় ভোটগ্রহণের সময় আরাবুলকে জেলে রাখতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ভোট শেষ হতেই আরাবুল জামিন পান। এর পর নিজের অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলের বৃত্তে নিজেকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার লড়াইয়ে নামেন তিনি। কিন্তু ততদিনে ভাঙড়ে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন অভিষেকের আশীর্বাদধন্য শওকত মোল্লা। আরাবুলকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল স্পষ্ট করে দিল ভাঙড়ের নতুন বাদশা শওকত। এক্ষেত্রেও অভিষেকের সঙ্গে সমীকরণ ভালো না হওয়ার খেসারত দিতে হল আরাবুলকে।