নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই নতুন তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে। দুই তদন্তকারী সংস্থা— সিবিআই এবং ইডি’র দাবি, এই দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এখন প্রায় ৬ মাস পার্থবাবু প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। গতকাল জঙ্গি মুসার তাড়া খেয়ে তিনি জেলের ভিতরে চোট পান। রক্তপাত হওয়ায় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় চিকিৎসার জন্য। কিন্তু জেলে ফিরে আসার পরও উৎপাত কমেনি।
কেমন আছেন প্রাক্তন মন্ত্রী? জানা গিয়েছে, এই চোট সামলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন ভালই আছেন। তবে জেলের বাইরে যখন ছিলেন তখন দলের ভিতরেও কেউ কেউ তাঁকে ‘মোটা দা’, ‘টেন এক্সেল’ বলে মশকরা করতেন। কিন্তু সেটা জেলের ভিতরে শুনতে হবে সেটা তিনি ভাবতে পারেননি। এই সব শুনে রেগে যাচ্ছেন পার্থবাবু। এখন জেলবন্দি অবস্থাতেও মশকরা, টিটকিরি, জ্বালাতন তিনি সহ্য করতে পারছেন না। তাও আবার ছিঁচকে চোরের কাছ থেকে আসছে টিপ্পনি।
ঠিক কী ঘটেছে সংশোধনাগারে? সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্সি জেলের সেল থেকে খুব একটা বাইরে বের হন না প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। আর সেলে বসে যখন বইপত্র ঘাঁটছেন বা বিশ্রাম করছেন পার্থবাবু, তখনই বাইরে থেকে বারবার ‘মোটু টুকি, মোটকা দা টুকি’ বলে ডাকা হচ্ছে। আর এই টিটকিরিতে জেরবার হয়ে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী রেগে কাঁই। এই বিষয়ে কারারক্ষীদের এবং জেল কর্তৃপক্ষকেও নালিশ জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কারা পার্থবাবুর সঙ্গে মশকরা করছে চেহারা নিয়ে? খুঁজতে শুরু করেছে জেল কর্তৃপক্ষ। তাতে দেখা গিয়েছে ছিঁচকে চুরির অপরাধে জেল খাটতে আসা দুই চোর এই কাণ্ড ঘটাচ্ছে। এখন পার্থবাবুর সেলের কাছ থেকে তাদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে খানিকটা স্বস্তি মিলেছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই একের পর এক বিড়ম্বনায় পড়েছেন। প্রেসিডেন্সি জেলে তাঁকে দেখামাত্রই কিছু বন্দি অনবরত ‘চোর, চোর’ বলে টিপ্পনি কাটত। ইডি হেফাজতে থাকাকালীন আদালতে হাজিরার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পার্থবাবুকে নিয়ে যাওয়া হয় জোকা ইএসআই হাসপাতালে। সেখানে গালিগালাজ এবং তাঁকে লক্ষ্য করে জুতো ছুড়েছিলেন এক মহিলা। এবার সেখানে নতুন নামের সংযোজন ‘মোটকা দা টুকি’ চিপ্পনিতে বেজায় চটেছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এই অবস্থাতেই পার্থবাবুকে মগ ছুড়ে মেরেছে আইএস জঙ্গি অভিযোগে বিচারাধীন মুসা। মগের আঘাতে টাল সামলাতে না পেরে মাটিতে পড়ে যান পার্থবাবু।