রাজ্য মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী হিসাবে ঠাঁই পেলেন দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। বাবা কমল গুহ ছিলেন বাম মন্ত্রিসভার ডাকাবুকো মন্ত্রী। বাম জমানায় সিপিএমের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে যিনি কথা বলতেন তিনি ছিলেন কমল গুহ। ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে নির্বাচিত, দিনহাটায় জননেতা বলে আজও পরিচিত কমল গুহ। তাঁরই পুত্র উদয়ন গুহ। লক্ষাধিক ভোটে দিনহাটা বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন উদয়ন। সেই উদয়ন গুহকেই পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিগতদিনে ফরওয়ার্ড ব্লকে থাকাকালীন বার বার মমতার বিরুদ্ধে সুর চড়াতেন উদয়ন। পরবর্তী সময় সেই উদয়নই ভিড়ে যান তৃণমূলে। তৃণমূলের এসেই হুঙ্কার শুরু করেন বিজেপির বিরুদ্ধে।
তবে ঘাসফুল শিবিরে যাওয়ার পরেও তৎকালীন জেলাসভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বিশেষ সুখকর ছিল না। উদয়ন গুহকে কেন্দ্র করে কোচবিহারে রাজনৈতিক সমীকরণ বার বার বদলেছে। এদিকে সেই দিনহাটার ভেটাগুড়ি থেকেই কোচবিহারের সাংসদ হয়েছেন বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক। পরবর্তীতে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীও হয়েছেন। সেই দিনহাটাতে নিশীথের বিজয় রথ থামাতেই কি মমতার তুরুপের তাস এবার উদয়ন?
দলের অন্দরমহল সূত্রে খবর, বিরোধীদের শায়েস্তা করতে মাঝেমধ্যে নানা বিতর্কিত মন্তব্য শোনা যায় উদয়নের গলায়। গ্রামে গ্রামে তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠিত করতে তাঁর নানা কর্মসূচি রাজ্য পার্টির নজর কেড়েছে। সেই উদয়ন গুহকে মন্ত্রী করে বিশেষ বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু এখানেই প্রশ্ন উঠছে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের একাংশ কতটা মন্ত্রী হিসাবে মেনে নেবেন কমলপুত্র উদয়ন গুহকে? সকলকে নিয়ে কতটা চলতে পারবেন সেই প্রশ্নটাও উঠছে। তবে মন্ত্রী হওয়ার জেরে কোচবিহারে উদয়ন গুহর গুরুত্ব যে বাড়ল এটা বলাই যায়।
উদয়ন গুহ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই সরকারের আমলে প্রথম মন্ত্রী। উত্তরবঙ্গ থেকে সম্ভবত একই পরিবারের দুজন সদস্য পরপর মন্ত্রী হল। মুুখ্যমন্ত্রী ভরসা রেখেছেন। কোনও হুঙ্কারের পুরষ্কার নয়। মুখ্যমন্ত্রী দেখেছেন। গ্রামেগঞ্জে ঘুরি। তাঁর ভরসার মর্যাদা রাখার জন্য যা করার সব করব। বাবা প্রায় ২০ বছর মন্ত্রী ছিলেন।