কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলির মধ্যে রয়েছে ইএম বাইপাস। প্রতিদিন ইএম বাইপাস হয় প্রচুর গাড়ি যাতায়াত করে। এই অবস্থায় যান চলাচলকে আরও গতিশীল করতে এবং পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইএম বাইপাসে ভূগর্ভস্থ পথ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেএমডিএ। ইতিমধ্যেই ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে গিয়েছে। আশা করা হচ্ছে খুব দ্রুতই কাজ শুরু হয়ে যাবে। দুর্গাপুজোর মধ্যে এই কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইএম বাইপাসে সংস্কারের কাজ হতে চলেছে, প্রবল যানজটে ভুগতে চলেছে নগরবাসী
সাধারণত ইএম বাইপাস যখন তৈরি হয়েছিল সেই সময় এই রাস্তার দুপাশে প্রচুর জলাভূমি ছিল। তবে নগরায়নের জেরে ক্রমেই সেই সমস্ত জ্বলাভূমি ভরাট হতে থাকে। আর তাতে একের পর এক গজিয়ে উঠতে থাকে বহুতল। তবে ইএম বাইপাস তৈরি হওয়ার সময় দুপাশে জলাভূমি থাকার কারণে প্রচুর কালভার্ট তৈরি করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে জলাভূমি সেই অর্থে না থাকায় সেই সমস্ত কনভার্টের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন এই সমস্ত কালভার্টগুলিই মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ সেগুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। তার ফলে রক্ষণাবেক্ষণও ঠিকমতো হচ্ছে না ফলে। তাতে যে কোনও সময় কালভার্টগুলি বসে দিয়ে বাইপাসে ধস নামতে পারে। এরফলে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তাই এই সমস্ত কালভার্টগুলিকেই ভূগর্ভস্থ পথ হিসেবে তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেএমডিএ।
কোথায় কোথায় হবে ভূগর্ভস্থ পথ? প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, ইএম বাইপাসের দুটি জায়গাকে ভূগর্ভস্থ পথ তৈরির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল উত্তর পঞ্চানন গ্রাম এবং সত্যজিৎ রায় ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের সামনে। কেএমডিএ সূত্রের খবর, উত্তর পঞ্চানন গ্রামের তৃণমূল ভবনের কাছে যে সিগন্যাল রয়েছে। সেই সিগন্যালের কাছে ক্রসিং রয়েছে। তা হয়েই পথচারীরা রাস্তা পারাপার করে থাকেন। তবে এখানে ভূগর্ভস্থ পথ তৈরি হলে সিগন্যালের আর কোনও প্রয়োজন হবে না। তখন সিগন্যাল উঠিয়ে দেওয়া হবে। আর রাস্তা পারাপারের জন্য যে ফাঁকা জায়গাটি রয়েছে সেটা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, সত্যজিৎ রায় ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের সামনে একইভাবে ভূগর্ভস্থ পথ তৈরি হবে। তবে ২৪ ঘণ্টা এই সমস্ত ভূগর্ভস্থ পথ খোলা থাকবে না। সকাল ৬ টা থেকে রাত্রি ১০টা পর্যন্ত এই পথ খোলা থাকবে বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই কাজের জন্য খরচ ধার্য করা হয়েছে ৫ কোটি টাকা। এই পথগুলিতে আলো এবং জল নিকাশির ব্যবস্থাও থাকবে। আর কয়েক মাসের মধ্যেই এই কাজ শুরু হয়ে যাবে। দুর্গাপুজোর আগে অক্টোবরের মধ্যেই এই পথ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। সব মিলিয়ে এই পথ চালু হলে পথচারীদের নিরাপত্তা যেমন নিশ্চিত করা যাবে তেমনি সিগন্যাল উঠে যাওয়ায় যানজট কমবে এবং যান চলাচলের গতি কমবে।