লকডাউনের জেরে চরমে উঠেছে আর্থিক টানাটানি। বিভিন্ন খাত থেকে কমেছে আয়। তাই বাধ্য হয়ে শুক্রবার থেকে পার্কিং ফি নিতে চলেছে কলকাতা পুরনিগম।
পার্কিং ফি বাবদ বছরে পুরনিগমের সাধারণত ২০ কোটি টাকা আয় হয়। কিন্তু লকডাউনের জেরে গত আড়াই মাস পার্কিং ফি আদায় বন্ধ ছিল। তার জেরে পুরনিগমের চার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। একইভাবে সম্পত্তি কর, নির্মাণ অনুমোদনের ফি ও জরিমানা, লাইসেন্স ফি থেকেও পুরনিগমের আয় একধাক্কায় ছ'গুণের বেশি কমেছে। অথচ সেগুলিই পুরনিগমের আয়ের মূল উৎস। লকডাউনে কর আদায়ের কাউন্টার বন্ধ থাকায় অনলাইনে সেই প্রক্রিয়া শুরু করে কিছুটা ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে আয় অত্যন্ত কম হয়েছে বলে জানিয়েছে পুর আধিকারিকরা।
তবে শুধু যে আয় কমেছে, তা নয়। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় পুরনিগমের ভাঁড়ার থেকে বাড়তি প্রায় ১৫০ কোটি টাকা বেরিয়ে গিয়েছে। সঙ্গে প্রতি মাসে স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মীদের বেতন এবং পেনশন বাবদ পুরনিগমের খরচ হয় ১৫০ কোটিরও বেশি। তার জেরে পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে পুরনিগম। তা সত্ত্বেও কর্মীদের জুনের পয়লা তারিখেই বেতন ঢুকেছে। তবে পেনশনের ক্ষেত্রে কিছুটা দেরি হয়েছে। পুর আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, গত আড়াই মাসে পুরনিগমের ভাঁড়ার প্রায় নিঃশেষ হয়ে এসেছে। তবে জুনের পর অবস্থা কী হবে, তা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছিল।
এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে পুরনিগমের কর জমা নেওয়ার সব কাউন্টার চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। একইসঙ্গে শুক্রবার থেকে পার্কিং ফি নেওয়া শুরু হচ্ছে। তবে কনটেনমেন্ট জোনে আপাতত পার্কিংয়ের সুবিধা মিলবে না বলে জানিয়েছেন প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার। পুর আধিকারিকদের আশা, দুই সিদ্ধান্তের ফলে কিছুটা পুরনিগমের আর্থিক অবস্থা কিছুটা ফিরবে। পাশাপাশি রাজ্য যে টাকা দেয়, তাও অগ্রিম মিলবে বলে আশাবাদী পুর আধিকারিকরা।