পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে অনশন করছেন জুনিয়র ডাক্তার। আর সেই অনশন তুলে নেওয়ার জন্য জুনিয়র ডাক্তারদের বাড়িতে ফোন করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে ‘সেটিং’ এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে বাঁচাতে ‘ব্যাট করছে’ যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ। তাঁর কথায়, ‘NBMCH-তে (উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল) অনশনরত ছাত্র অলোক বর্মার বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আজ ওঁর বাড়িতে বাবা-মা'কে ফোন করে ছেলেকে অনশন তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। ভেবে দেখুন, সেটিং কোন পর্যায়ে! মমতাকে (তৃণমূল সরকার) বাঁচাতে ব্যাট করছে যোগীর পুলিশ (বিজেপি সরকার)।’ যদিও মীনাক্ষীর সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বা উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
উত্তরবঙ্গেও অনশন ২ জুনিয়র ডাক্তারের
যে অলোকের বাড়িতে ফোন করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে ‘চাপ’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের পড়ুয়া। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পরে ১০ দফা দাবিপূরণের দাবি জানিয়ে কলকাতায় ধর্মতলায় কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তার (অসুস্থ অনিকেত মাহাতোকে ধরলে আপাতত নয়জন) যে আমরণ অনশন করছেন, তাতে যোগ দিয়েছেন অলোক। তিনি কলকাতায় আসেননি। উত্তরবঙ্গেই অপর এক জুনিয়র ডাক্তারের সঙ্গে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
মা'কে বোঝানোর চেষ্টা করছিল পুলিশ, দাবি অলোকের
শুক্রবার অলোক দাবি করেন, তাঁর বাড়িতে পুলিশের ফোন গিয়েছিল। সরাসরি কোনও হুমকি দেওয়া হয়নি। অলোক যাতে অনশন তুলে নেন, সেজন্য ‘চাপ’ দেওয়া হয়েছে। তাঁর মা'কে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে অলোকের শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে। কেন তাঁকে অনশন তুলে নিতে বলা হচ্ছে না? তারপর থেকে মায়ের সঙ্গে ফোনে তাঁর একাধিকবার কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অলোক। তবে তিনি এটাও জানিয়ে দিয়েছেন যে পুলিশ ‘চাপ’ দিলেও মাথানত করবেন না। যতক্ষণ না তাঁদের দাবিপূরণ হচ্ছে, ততক্ষণ অনশন চালিয়ে যাবেন।
দাবি না মেনে নিয়ে বাড়িতে পুলিশ পাঠাচ্ছে, হতবাক দেবাশিস
একইসুরে ধর্মতলার অনশন মঞ্চ থেকে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট’-র অন্যতম ‘মুখ’ তথা জুনিয়র আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’ দেবাশিস হালদার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পুলিশের চোঙরাঙানিকে তাঁরা ভয় পান না। কিন্তু এটা বুঝতে পারছেন না যে ন্যূনতম কয়েকটা দাবি মেনে নিতে পারছে না রাজ্য সরকার। করছে টালবাহানা। অথচ বাড়িতে পুলিশ পাঠাচ্ছে। পুলিশকে দিয়ে ফোন করিয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে। অথচ তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়টি অনেক সহজ। পাঁচ মিনিটেই সেই কাজটা হয়ে যাবে বলে দাবি করেন দেবাশিস।