আজ প্রেম দিবস। ভ্যালেন্টাইন ডে। গোলাপ হাতে প্রেমিক–প্রেমিকাকে প্রেম নিবেদন করবে। এটাই আজকের ছবি। ইতিমধ্যেই বাড়ির সদস্যদের নানা অসত্য কথা বলে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে প্রেমিক–প্রেমিকারা। বিশেষ করে কলেজ পড়ুয়ারা। আজই বিশেষ ক্লাস আছে কলেজে। এমন তথ্যও প্রেমিকারা বাড়িতে দিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। সেখানে ছেলেরা একটু বেপরোয়া। বাড়িতে এত কথা বলার প্রয়োজন মনে করে না তারা। খুব বেশি হলে, একটু দরকার আছে বের হচ্ছি। এই কথা বলে প্রেমিকার হাত ধরে প্রেমের জাল বুনতে চলে গিয়েছে। কিন্তু এমন মাখো মাখো আবহে প্রেমের পথে কি কাঁটা বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ? এই প্রশ্ন এখন উঠতে শুরু করেছে। কারণ একটি নির্দেশিকা ভাইরাল হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে সকলেই নানা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে চোখ রেখেছেন সকাল থেকে প্রেমিক–প্রেমিকারা। সেখানেই কথা হয়ে গিয়েছে—কে, কোথায় অপেক্ষা করবে এবং কখন যাবে সেসব কথা হয়ে গিয়েছে। আর তাই প্রেমিক–প্রেমিকাদের কাছে ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখের গুরুত্বই আলাদা। এবার এই ভ্যালেন্টাইন্স ডে নিয়ে তীব্র আপত্তি উঠল। বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নাম করে লেখা একটি নির্দেশিকা রাতারাতি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যে নির্দেশিকা ঘিরে এখন বঙ্গে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। পাল্টা প্রেমিক যুগলদের পাশে দাঁড়িয়ে বিশেষ সুরক্ষার উদ্যোগ নিল তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি উইং।
আরও পড়ুন: বারুইপুরে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ, গ্রেফতার যুবক
আর গোটা বিষয়টি যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে রাজ্য–রাজনীতি সরগরম। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র দিন জনসমক্ষে প্রেমিক যুগলের ঘুরে বেড়ানো নিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। এমনকী আপত্তিকর অবস্থায় কোনও যুগলকে দেখা গেলে হেস্তনেস্ত করা হবে। তাঁদের বাবা–মায়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হবে। প্রয়োজনে তড়িঘড়ি যুগলের বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে। এমনই কথা লেখা আছে ওই ছবিতে। যদিও এই ভাইরাল লেখাটির সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। তবে ফেসবুকে পোস্ট করা ওই ছবিতে লেখা আছে, ‘১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন্স ডে উৎসব পালন ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী। আগামী নির্বাচনের পর বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গে লাভ জিহাদ এবং ব্যাভিচারের বিরুদ্ধে এবং বাঙালি যুবক–যুবতীদের চরিত্রের উন্নয়নে নানা ইতিবাচক পদক্ষেপ করবে।’ এটাই এখন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
আরএসএস–র শাখা সংগঠন প্রেমের মাঝে ভিলেন হবে? এই চোখরাঙানি মেনে নিতে নারাজ নেটপাড়ার সদস্যরা। এই জোর জবরদস্তি চলতে পারে না। ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে সোচ্চার হয়েছেন অনেকে। এই বিষয়ে সংবাদসংস্থা এএনআই’কে হায়দরাবাদ বজরং দলের আহ্বায়ক অখিল বলেন, ‘পুলওয়ামা কাণ্ডে আমাদের শহিদ বীর জওয়ানদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে চাই। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি অনুকরণ করে এই দিনটি চিহ্নিত করা হোক সেটা চাই না।’ আর তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য পোস্ট করেছেন, ‘বজরং দল কিংবা বিজেপির অন্যান্য উচ্চিংড়ে কোনও সংগঠন প্রেমিক–প্রেমিকাদের বিরক্ত করলে তাঁদের সাহায্যের জন্য প্রস্তুত থাকবে আমাদের আইটি উইংয়ের ছেলেরা।’