ঘন কুয়াশার জেরে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে দমদম নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামায়। দৃশ্যমানতা কার্যত শূন্যে নেমে যাওয়ায় অত্যাধুনিক ল্যান্ডিং ব্যবস্থা থাকলেও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের। কুয়াশার জেরে প্রভাব পড়েছে গ্রাউন্ড অপারেশনসেও। যার ফলে সকাল ৫টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মোট ৭৩টি বিমানে প্রভাব পড়েছে। প্রভাবিত হয়েছেন প্রায় ১৩ হাজার যাত্রী।
বসন্তের আগমনের বার্তা দিয়ে বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে বইতে শুরু করেছে আর্দ্র পূবালি বাতাস। পশ্চিমা বাতাসের সঙ্গে তার সংঘর্ষে গোটা দক্ষিণবঙ্গজুড়ে তৈরি হয়েছে ঘন কুয়াশার চাদর। যা বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে সব থেকে বড় বাধা। যার জেরে বৃহস্পতিবার সকালে দমদম বিমানবন্দরে বিমান চলাচল ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ২১টি বিমান অবতরণে দেরি হয়েছে। ৩৯টি বিমান উড়তে দেরি হয়েছে। দৃশ্যমানতা কম থাকায় ২টি বিমান রানওয়ে থেকে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন পাইলটরা। ১১টি বিমানকে অন্যান্য বিমানবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বহু বিমানকে অবতরণের জন্য চক্কর কাটতে হয়েছে আকাশে। বেশ কয়েকটি বিমান বাতিল করতে হয়েছে।
অসামরিক বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে সব থেকে বড় বাধা হল কুয়াশা। কারণ বিমান দুর্ঘটনা সব থেকে বেশি হয় বিমান মাটিতে থাকার সময়। আর মাটিতে থাকাকালীন দুটি বিমানের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের টাওয়ার থেকে বিমানবন্দরের রানওয়ে, ট্যাক্সি বে ও অ্যাপ্রন এরিয়া দেখতে পাওয়া বাধ্যতামূলক। দৃশ্যমানতা কম থাকলে শুধুমাত্র দক্ষ ও অভিজ্ঞ এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারদেরই টাওয়ারে দায়িত্বে রাখা হয়। আর কম দৃশ্যমানতায় বিমানগুলিকে নিরাপদে রাখতে ২টি বিমানের মধ্যে দূরত্ব অনেক বেশি রাখতে হয়। রানওয়েতে বিমান প্রবেশের ক্ষেত্রে জারি করা হয় বাড়তি সতর্কতা। তার পরেও বহু পাইলট কম দৃশ্যমানতায় বিমান টেক অফ করতে নিরাপদ মনে না করলে রানওয়ে থেকে বিমান ফিরিয়ে আনেন তিনি। কোনও পাইলট অবতরণ নিরাপদ মনে না করলে সেই বিমানকে আকাশে চক্কর কাটতে বলা হয়, বা পাঠিয়ে দেওয়া হয় কাছাকাছি বিমানবন্দরগুলিতে।