বাংলাকে বঞ্চনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই অভিযোগ বারবার তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বঞ্চিত রেখে বাংলাকে ভাতে মারার চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ উঠল বিধানসভায়। শিক্ষাক্ষেত্রেও বাংলাকে কেন্দ্রীয় সরকার বঞ্চনা করছে বলে উঠল অভিযোগ। চলতি অর্থবর্ষে ‘সমগ্র শিক্ষা মিশনের’ এক টাকাও বাংলাকে দেওয়া হয়নি বলে মঙ্গলবার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই অভিযোগ তুলে বিগত তিনটি অর্থবর্ষে এই খাতে বরাদ্দ ক্রমাগত কমিয়েছে কেন্দ্র বলা দাবি তাঁর। চলতি বছরে ‘সমগ্র শিক্ষা মিশনের’ খাতে কোনও টাকাই দেওয়া হয়নি। ২০২৪ সালের ১৭৪৫.৮০ কোটি টাকা–সহ এই খাতে বাংলার মোট ৩২৮৮ কোটি কেন্দ্র আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ ব্রাত্যর।
এদিন একটি স্কুলবাড়ির মেরামত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তার জবাবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘একটি নয়, অনেক স্কুলই মেরামত করার প্রয়োজন আছে। রাজ্য সরকারের যা করণীয় সব করা হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের জন্য নানা উন্নয়নমূলক কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার চলতি অর্থবর্ষে ‘সমগ্র শিক্ষা মিশনের’ এক টাকাও দেয়নি। রাজ্যের ন্যায্য প্রাপ্য দ্রুত ছেড়ে দেওয়া উচিত।’ বিরোধী দলের বিধায়কদেরও বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে আবেদন জানানোর অনুরোধ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: কৃষি থেকে শিক্ষা নিয়ে অভিষেকের কড়া প্রশ্ন সংসদে, মন্ত্রীদের জবাবে মিলল বঞ্চনার প্রমাণ
আবার কেন্দ্রীয় সরকারের পেশ করা ‘সমগ্র শিক্ষা অভিযান’ নিয়ে পরিসংখ্যানেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রমাণ মিলেছে বাংলার ক্ষেত্রে। এই প্রকল্পে ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষে বাংলার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৭৬৭.৪৮ কোটি টাকা। তার আগের অর্থবর্ষে বাংলার জন্য বরাদ্দ ছিল ১৭৭৩.৩৮ কোটি টাকা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংসদে প্রশ্নের উত্তরে এই তথ্যই দিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। কোন কারণে বরাদ্দ টাকা কমানো হচ্ছে? কেন এই প্রকল্পের বরাদ্দ টাকা বাংলা পাচ্ছে না? লোকসভায় লিখিত প্রশ্ন রেখেছিলেন সাংসদ। কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি এনডিএ সরকারের মন্ত্রী।
একশো দিনের কাজের টাকা, আবাস যোজনার টাকা থেকে শুরু করে একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলাকে বঞ্চনা করার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গতকাল কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের প্রতিনিধিদলের সামনে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার হিসেব তুলে ধরেছিলেন খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বাংলা থেকে কতজন বিদেশে পড়তে যাচ্ছে সেটা জানতে একটি সমীক্ষা করা হচ্ছে বলেও জানান ব্রাত্য বসু। শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী জানান, বিষয়টি তাদের নজরে রয়েছে। সমীক্ষা শেষ হলেই তথ্য জানা যাবে। রাজ্য সরকার সেই তথ্য ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালে দিয়ে দেবে।