নদী ভাঙন থেকে দূষণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। আজ, বুধবার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে তোপ দাগেন এই বিধায়ক। উত্তরবঙ্গ নিয়ে এই বিধায়ক যে তথ্য বিরোধী দল বিজেপির সামনে তুলে ধরেন তাতে চুপ করে সবটা শোনা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না প্রধান বিরোধী দলের। ভুটানের নদীর জলে ডলোমাইটের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। আর সেই নদীর জল বাংলায় ঢুকে দূষণ ছড়াচ্ছে। জলের দূষণের জেরে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা বিপদের মুখে পড়ছে। এই ভয়াবহ সমস্যা নিয়ে রাজ্য বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও উদ্যোগ নেই বলেই অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
ভুটানের নদীর জল যে এখানে নেমে আসছে সে কথা আগেই বলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির ক্ষতি হচ্ছে। এমনকী এই দূষণ ঠেকাতে ভারত–ভুটান যৌথ নদী কমিশন গঠন করার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সমস্যা নিরসনে কেন্দ্রের কাছে আবেদন করার জন্য একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর কথাও মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন। কিন্তু এই বিষয়ে বিজেপি পরিষদীয় দল কোনও উৎসাহ না দেখানোয় সমস্যা মিটছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ, বুধবার বিধানসভায় এই বিষয়টি তুলে ধরেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল।
আরও পড়ুন: সোমবার কি জামিন পেতে চলেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়? সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে ইডি
সদ্য উত্তরবঙ্গের মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্র বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে। সেটি জিতে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস উপনির্বাচনে। মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিচ্ছে কাজ করছে বলে। সেখানে কাজ না করার জন্য একের পর এক আসন হাতছাড়া হচ্ছে বিজেপির। তবে আজ তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কের বক্তব্য শুনে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষদীয় মন্ত্রীকে আবার একই নির্দেশ দিয়েছেন। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যদি এরপরও বিজেপির কেউ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যেতে রাজি না হয় তাহলে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কদের একটি প্রতিনিধিদল বিষয়টি নিয়ে যেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবে। তারপর তাঁরাই যেন কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হয়।
আসলে বর্ষায় এই ভুটানের নদীর জল বাংলায় এসে মিশে ক্ষতি করছে এখানকার সাধারণ মানুষের জীবন। দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে উত্তরবঙ্গে। এমনকী বানভাসী পরিস্থিতি তৈরির ক্ষেত্রেও ভুটানের নদীর জল অনেকাংশে দায়ী। আগে বন্যায় উত্তরবঙ্গে ভেসে যাওয়ার ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ডিভিসির অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে বন্যা হয় উত্তরবঙ্গে। তার সঙ্গে সিকিমের জল যোগ হওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছিলেন, ভুটান থেকে জল ছাড়ার জেরে উত্তরবঙ্গ ভেসে যায়। এবার সেই ভুটান থেকে আসা নদীর দূষিত জল নিয়ে বিধানসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল কংগ্রেস।