বিধানসভায় শাসকদলের বিধায়কদের কাজকর্ম নিয়ে বেজায় চটলেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। কারণ বিধায়করা বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে নিজের মর্জিতে আসা যাওয়া করেছেন বলে অভিযোগ। আবার তাঁরা এসে বিধানসভা অধিবেশন কক্ষে শুধুই বসে রইলেন। গত এক বছরে যতদিন অধিবেশন হয়েছে ততদিনের মধ্যে একদিনের জন্যও নিজের কেন্দ্রের মানুষের দাবি বা সমস্যা নিয়ে কোনও বক্তব্য তুলে ধরেননি বলে অভিযোগ। তৃণমূল কংগ্রেসের এমন বিধায়কের সংখ্যা শতাধিক। যা নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ রাজ্যের পরিষদীয়মন্ত্রী বলে সূত্রের খবর। প্রশ্নোত্তর পর্ব, বিল, প্রস্তাবের কোনও আলোচনাতেই অংশ নেননি সেইসব বিধায়করা। অধিবেশন কক্ষে শুধু দর্শক হয়েই ছিলেন বলে অভিযোগ।
বুধবার ছিল এই বছরের বিধানসভার অধিবেশনের শেষ দিন। বিধানসভা সূত্রে খবর, এই বছরে সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ দিন অধিবেশন বসেছে বিধানসভায়। যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের শতাধিক বিধায়কের ‘পারফরম্যান্স’ অত্যন্ত খারাপ। এই পারফরম্যান্স এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে তুলে দিতে চলেছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। কারণ এই বিধায়করা কোনও আলোচনাতেই অংশ নেননি। যেখানে কয়েকদিন আগে পরিষদীয় দলের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিধানসভায় এসে শুধু সই করে চলে গেলে হবে না। উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখতে হবে বিধায়কদের। যদিও তা পালন করা হল না বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: জয়নগরের পর ফরাক্কা, দু’মাসের মধ্যে ধর্ষণ–খুনে অভিযুক্তরা দোষী সাব্যস্ত, উদ্যোগী পুলিশ
‘নীরব দর্শক’ ছিলেন দশবারের বিধায়ক ইসলামপুরের বর্ষীয়ান নেতা আবদুল করিম চৌধুরীকে। সাবিত্রী মিত্র, চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, গিয়াসুদ্দিন মোল্লা, গুলশন মল্লিক, পরেশ পাল, সুদীপ্ত রায়, তপন দাশগুপ্ত, দুলাল দাস এবং কয়েকজনকে বিধানসভায় বলতে দেখা যায়নি। আর কাঞ্চন মল্লিক, সোহম চক্রবর্তী, রত্না চট্টোপাধ্যায়, সৌমিক হোসেন, বিদেশ বোস, বিধান উপাধ্যায়, বিবেক গুপ্তা, ঊষারাণি মণ্ডল–সহ একাধিক বিধায়কদের বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে কোনও কথা বলতে দেখা যায়নি। এই বিষয়ে পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘বিধানসভার অধিবেশনে কিছু বিধায়কের পারফরম্যান্স খুব ভাল। আবার বেশ কয়েকজন আছেন, যাঁরা কোনও বক্তব্যই রাখেননি। এই বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলা হবে।’
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় যদি এই পারফরম্যান্স রিপোর্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেন তাহলে অধিকাংশ বিধায়ককে কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে। তার উপর ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রেও অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। উপনির্বাচনে জিতে আসা একাধিক বিধায়কের বক্তব্য বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে নজর কেড়েছে সকলের। তবে এটা শুধু তৃণমূল কংগ্রেসেই আছে এমন নয়। বিজেপির অধিকাংশ বিধায়ক আছেন যাঁরা চুপচাপ ছিলেন গোটা অধিবেশনেই। বিজেপি বিধায়ক গোপাল সাহা, বরেণচন্দ্র বর্মণ, পবন সিং, নীরজ তামাং জিম্বার মতো কিছু বিধায়ককে মুখ খুলতে দেখা যায়নি।