আজই (বুধবার - ১২ মার্চ, ২০২৫) বিধানসভার অন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ। এমনকী, তাঁর অভিযোগ - বিধানসভার ভিতর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে খুন পর্যন্ত করা হতে পারে! আর, এদিকে আজই বিধানসভার সচিবালয়ের পক্ষ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর ব্যক্তিগত সচিবকে লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হল - বিধানসভার অভ্যন্তরের এবং বিধানসভা চত্বরের নিরাপত্তাব্যবস্থা যথেষ্টই পোক্ত। তাই সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।
আজ, বিধানসভার সচিবালয়ের তরফে ডেপুটি সেক্রেটারি তাঁর জবাবি চিঠিটি পাঠিয়েছেন শুভেন্দুর ব্যক্তিগত সচিব প্রদীপকুমার চট্টোপাধ্য়ায়ের উদ্দেশে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি (২০২৫) বিধানসভার সচিবালয়ের প্রধান সচিবকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন প্রদীপ - তার প্রেক্ষিতে।
সেই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই সেখানে উগ্রপন্থা ও কট্টরপন্থা মাথাচাড়া দিয়েছে। এর জেরে হিজব-উত-তহরির (হিজবুত) এবং হরকত-উল-জিহাদ-আল-ইসলামি বাংলাদেশ (হুজি-বি) -এর মতো উগ্রপন্থী সংগঠনগুলি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করতে পারে।
প্রদীপ আরও উল্লেখ করেন, সম্প্রতি এ রাজ্যের পুলিশও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থেকে জাভেদ মুন্সি নামে এক সম্ভাব্য জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। এছাড়াও, প্রতিবেশী রাজ্য অসমের পুলিশবাহিনীর এসটিএফ এপার বাংলার মুর্শিদাবাদ থেকে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসারউল্লাহ-বাংলা টিম (এবিটি) দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে।
পাশাপাশি, সম্ভাব্য সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের তরফেও রাজ্য পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে শুভেন্দুর ব্যক্তিগত সচিবের দাবি ছিল, বিরোধী দলনেতার নিরাপত্তার স্বার্থে বিধানসভায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের অনুমতি দেওয়া হোক। যে অনুমতি বর্তমানে নেই।
গত ৭ ফেব্রুয়ারির সেই চিঠির জবাব আজ দেওয়া হয়েছে বিধানসভার সচিবালয়ের তরফ থেকে। তাতে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পদাধিকার বলে বিধানসভার অধ্যক্ষ বা স্পিকারই হলেন হাউসের এবং গোটা চত্বরের সর্বেসর্বা।
তাঁর নির্দেশ অনুসারে, ইতিমধ্যেই বিধানসভার 'মার্শাল কাম সিকিউরিটি অফিসার' বিধানসভার অভ্যন্তরে এবং বাইরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় নির্মাণ করেছেন। এই কাজে তাঁকে সাহায্য করছেন - ডেপুটি মার্শাল, ডেপুটি সিকিউরিটি অফিসার এবং বিধানসভার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাক্ষীরা। উপরন্তু, কলকাতা পুলিশ ৭০ জন সদস্যও অধিবেশন চলাকালীন মোতায়েন থাকছেন। তাই আলাদা করে যে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বিধানসভা চত্বরে ঢুকতে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই, সেটা এদিনের এই চিঠিতেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
শুভেন্দুর ব্যক্তিগত সচিবের বক্তব্য ছিল, যদি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বিধানসভায় ঢোকার অনুমতি না দেওয়া হয়, আর তার ফলে যদি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কোনও অঘটন ঘটে যায়, তাহলে স্পিকারকেই তার দায় নিতে হবে।
তাই, কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে 'পূর্ণ সহযোগিতা' পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছিলেন শুভেন্দুর ব্যক্তিগত সচিব। ঠিক, একইভাবে এদিনের জবাবি চিঠিতেও তাঁর কাছ থেকে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে 'পূর্ণ সহযোগিতা' পাওয়ার আশা করা হয়েছে!