উপনির্বাচন শেষ হয়ে ফলাফল প্রকাশের পরই রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন বসতে চলেছে। শীতকালীন অধিবেশন আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বিধানসভায়। মঙ্গলবার এই কথা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিধানসভার অন্দরে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এমন তথ্য দিলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের অধিবেশনে বাণিজ্য সম্মেলন–সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানান পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই অধিবেশন চলবে প্রায় ১১ দিন ধরে।
ইডি–সিবিআইয়ের অতি সক্রিয়তা নিয়ে এদিনও সরব হন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সম্প্রতি একাধিক রাজ্যের স্পিকারদের নিয়ে আয়োজিত সম্মেলনেও এই বিষয়টি নিয়ে তিনি সরব হয়েছিলেন। আর এবার বিধানসভায় বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘২৫ তারিখ থেকে আমাদের অধিবেশন হবে। অধিবেশন ১০–১১ দিন পর্যন্ত চলতে পারে। এবারের অধিবেশনে আমাদের বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। বিজনেস অ্যাডভাইজরি কমিটিতে ওই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে। সেই আলোচনায় একটা কর্মসূচি সাজানো হবে। স্পিকাররা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। ইডি–সিবিআই দিয়ে স্পিকারদের বাড়িতে রেইড করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিধায়ক, মন্ত্রীদের ক্ষেত্রেও এরকম ঘটনা ঘটেছে। স্ট্যান্ডিং কমিটির এক সদস্য বিধানসভার বৈঠকে যোগ দিতে এসেও না পেরে বাড়িতে দৌড়ে গিয়েছিল।’
আরও পড়ুন: নিরাপত্তা থেকে রেফারেল সিস্টেম নিয়ে তথ্য দিল রাজ্য সরকার, কী আছে হলফনামায়?
অধিবেশনের বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোচনা হয়েছে। তখন তারিখ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সম্মত হন। দুর্গাপুজোর আগে বিধানসভায় একদিনের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল। ওই অধিবেশনেই অপরাজিতা বিল পাশ করিয়েছিল রাজ্য সরকার। ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় কড়া শাস্তি দিতে এই বিলটি পাশ করিয়ে অনুমোদনের জন্য বিলটি রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হলে তিনি সেটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছেন বলে খবর। এই নিয়ে স্পিকারের বক্তব্য, ‘অপরাজিতা বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে রাজ্যপাল আমাদের জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু নিয়ম হল বিল পাশ হয় বিধানসভায়। সেটা আমরা রাজ্যপালের কাছে পাঠাই। কিন্তু তার ভবিষ্যৎ আমরা জানতে পারি না। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এটা হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।’
গতকাল কেন্দ্রীয় বাহিনী দেহরক্ষীদের নিয়ে বিধানসভায় ঢুকতে গিয়ে বাধা পান বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এবং অশোক দিন্দা। বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেহরক্ষীদের নিয়ে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে অধ্যক্ষের একটি নির্দেশিকা আছে। তাতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। তখন দেহরক্ষীদের বাইরে রেখে বিধানসভায় প্রবেশ করেন শঙ্কর এবং অশোক। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘তদন্তের নামে যখন তখন বিধায়কদের ডেকে পাঠিয়ে বিব্রত করা ঠিক নয়। কাউকে সিবিআই তদন্তের জন্য ডেকে পাঠাতেই পারে। কিন্তু আগাম জানাতে অসুবিধা কোথায়? তাতে বিধানসভার কাজে সমস্যা হয় না।’