নির্বাচিত চার বিধায়কের শপথের দিনক্ষণ জানালেন স্পিকার, সংঘাতের পথে বিধানসভা

এই প্রশ্নের জবাব দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়ম স্মরণ করিয়ে দেন। তারপর থেকেই চুপচাপ রাজভবন। বিধানসভার রীতি অনুযায়ী, অধিবেশন চলাকালীন স্পিকার সেখানে উপস্থিত থাকলে ডেপুটি স্পিকার শপথ করাতে পারেন না। সেই নিয়ম মেনে অধ্যক্ষকেই বিধায়কদের শপথের দায়িত্ব তুলে দেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।

আজ হল না। নির্বাচিত চার বিধায়কের শপথ সোমবার হল না। তবে তাঁরা শপথ নেবেন মঙ্গলবার। আগামীকাল এই অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়ে দিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজভবনের থেকে সবুজ সংকেত মেলেনি। এই নিয়ে চিঠি চালাচালি পর্যন্ত হয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে শপথের প্রস্তুতি সেরে রাখল বিধানসভার সচিবালয়। বিধানসভা সূত্রে খবর, আজও রাজভবন থেকে শপথগ্রহণ নিয়ে কোনও সাড়াশব্দ মেলেনি। তাই বিধানসভার রীতি মেনে মঙ্গলবার শপথ নেবেন রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী, রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণকল্যাণী, মানিকতলার বিধায়ক সুপ্তি পাণ্ডে এবং বাগদার বিধায়ক মধুপর্ণা ঠাকুর।

এই চারজন বিধায়কের শপথ করার জন‌্য প্রথা মেনে রাজভবনের কাছে অনুমতি চায় বিধানসভার সচিবালয়। কিন্তু টালবাহানা অব্যাহত রেখেছে রাজভবন। রাজভবন থেকে কয়েকটি প্রশ্ন তৈরি করে তা বিধানসভায় পাঠানো হয়েছিল। যার জবাব দিয়েছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে সব চুপচাপ। বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকারের শপথ নিয়েও রাজভবনের সঙ্গে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল বিধানসভার। আজ থেকে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন শুরু হয়েছে। অধিবেশনের প্রথমে দিনেই স্পিকার জানান, মঙ্গলবার বিধানসভায় শপথ গ্রহণ করবেন চার বিধায়ক।

এদিকে এই আবহে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নয়াদিল্লি পাড়ি দিয়েছেন। সুতরাং শপথ নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। কবে শপথ হবে?‌ এই প্রশ্ন নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়। তখন বাধ্য হয়ে আলোচনা করে চার বিধায়কের শপথের প্রস্তুতি সেরে রাখে বিধানসভার সচিবালয়। ১৩ জুলাই উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশ হয়েছে। বিধায়কদের শপথ করাতে রাজভবনে চিঠি পাঠিয়েছিল বিধানসভার সচিবালয়। কিন্তু বিধানসভার চিঠির জবাবে রাজভবন পাল্টা চিঠিটি দেয় বিধানসভার সচিবালয়কে। সেখানে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হোসেন সরকারের শপথবাক্য পাঠ করানো নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। ডেপুটি স্পিকারের বদলে স্পিকার শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন বলে রাজ্যপাল তা জানতে পেরেছেন। সেটি কি সত্য?‌ প্রশ্ন রাজভবনের।

অন্যদিকে এই প্রশ্নের জবাব দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়ম স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। তারপর থেকেই চুপচাপ রাজভবন। বিধানসভার রীতি অনুযায়ী, অধিবেশন চলাকালীন স্পিকার সেখানে উপস্থিত থাকলে ডেপুটি স্পিকার শপথ পাঠ করাতে পারেন না। তাই সেই নিয়ম মেনে অধ্যক্ষকেই বিধায়কদের শপথের দায়িত্ব তুলে দেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কথাই চিঠিতে লিখে রাজভবনে পাঠান বিধানসভার অধ্যক্ষ। এবার জটিলতা এড়াতে বিধানসভার পক্ষ থেকে শপথের কথা আগাম জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল রাজভবনকে। কিন্তু রাজভবন আর কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দেওয়ার কথা মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের। সেদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকও রয়েছে।