বাজেট অধিবেশন শুরু হতেই উত্তপ্ত রাজ্য বিধানসভা। যার জেরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা-সহ চার বিজেপি বিধায়ককে প্রথমে সাসপেন্ড করেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ আনা হয়। আর, এবার শুভেন্দুকে সরাসরি ক্ষমা চাইতে বললেন স্পিকার!
মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, 'বিধানসভা দুর্বল নয়। আপনাদের মাধ্যমে এই বার্তাই ওঁদের (শুভেন্দু অধিকারীদের) দিতে চাই। যা খুশি বলে যাব, বিধানসভার সদস্য হিসাবে, বিধানসভার সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে, যদি বাইরে গিয়ে সমালোচনা করেন, তাহলে বিধানসভাও জানে কীভাবে তাঁকে ট্রিট করতে হবে! নিজেকে হিরো বলে জাহির করার চেষ্টা, বিধানসভা কখনই মানবে না এসব!'
এই প্রসঙ্গেই স্পিকার আরও বলেন, 'প্ররোচনা দিচ্ছেন শুভেন্দু, অশান্তি ছড়াতে পারে। অবিলম্বে ক্ষমা চান শুভেন্দু।' রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, সরকার পক্ষের সঙ্গে বিরোধী দলনেতার এই ধরনের সংঘাত একেবারেই অনভিপ্রেত এবং কিছুটা নজিরবিহীনও বটে।
প্রসঙ্গত, সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন বিজেপি বিধায়করা সম্প্রতি রাজ্যে সরস্বতী পুজোয় বাধা দেওয়া নিয়ে বারবার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়ে আলোচনা চেয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনার দাবি। সেই দাবি যেহেতু মানা হয়নি, তাই সভাকক্ষে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। ওয়েলে নেমে স্লোগান তোলা হয়। এমনকী, কাগজ ছিঁড়ে তা ছুড়ে ফেলা হয়। এর জেরেই শুভেন্দু-সহ চার বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করেন অধ্যক্ষ। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ আনা হয়।
শুভেন্দু অবশ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে পাত্তা দিতে নারাজ। উলটে তিনি দাবি করেন, 'এই নিয়ে পাঁচবার আমাকে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ পাঠানো হল । শাসকের এই ভয় আমার ভালো লাগছে!'
এদিকে আবার বিধানসভার অন্দরে ধর্মীয় মন্তব্য করার জন্য শুভেন্দু সমালোচনা করেছেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় । তিনি বলেন, শুভেন্দু অধিকারী 'ন্যক্কারজনক ব্যবহার করেছে । এটা জাতির লজ্জা । গণতন্ত্রের লজ্জা । তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি । আশা করি, সারা দেশের ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ ধিক্কার জানাবে।'
আর সেই প্রেক্ষিতেই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায় শুভেন্দু প্রসঙ্গে এবং তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেন, 'শুভেন্দু অধিকারী বাইরে গিয়ে হিরো সাজছেন! কিন্তু, তিনি ভিতরে যা করেছেন, তাতে ওঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত!'