মিষ্টি সম্পর্ক তৈরি করতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তারপর থেকে মিষ্টতা দেখা যেতে শুরু করেছে। সুতরাং দূরত্ব কমতে শুরু করেছেন। বরং সৌজন্য দেখা যাচ্ছে। এই আবহে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন শুরু হতে চলেছে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি হবে বাজেট অধিবেশন। আর ১২ ফেব্রুয়ারি হবে রাজ্য বাজেট। এই বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে আমন্ত্রণ করার ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অধিবেশন প্রথা অনুযায়ী রাজ্যপালের ভাষণের মধ্য দিয়ে শুরু করতে চাইছে রাজ্য বিধানসভা। তারই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণ দিয়েই শুরু হয় বাজেট অধিবেশন। তারর উপর চলে আলোচনা। কিন্তু গত বাজেট অধিবেশনে রাজ্য–রাজ্যপাল সংঘাত চরমে উঠেছিল বলে রাজ্যপালকে ছাড়াই বাজেট অধিবেশন শুরু করা হয়। পরিষদীয় আইনের জেরে তা করা যায়। আসলে বাজেট অধিবেশন রাজ্যপালই ডেকে থাকেন। আর সেটা পরিচালনা করেন অধ্যক্ষ। কিন্তু ২০২৩ সালের শীতকালীন অধিবেশন শেষে অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করেননি অধ্যক্ষ। সুতরাং নতুন করে বাজেট অধিবেশন শুরুর জন্য রাজ্যপালের মুখাপেক্ষী হতে হয়নি রাজ্যকে। রাজ্যপালকে ছাড়াই বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। তবে এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। তাই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানানোর চিন্তাভাবনা আমরা রেখেছি।’
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক–উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে করতে পদক্ষেপ, ১৪টি এআই পদে রদবদল শিক্ষা দফতরের
সদ্য সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করে আসেন। যেখানে একদা তিনি বলেছিলেন, আর রাজভবনে যাবেন না। দরকার পড়লে বাইরে দেখা করে নেবেন। এটা থেকেই বোঝা যায়, পরিস্থিতি বদলেছে। আর রাজ্য সরকারের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে রাজভবন বদ্ধপরিকর বলে বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপালও। ফলে বিরোধ এখন অতীত। মিষ্টি সম্পর্ক বর্তমান। কিছুদিন আগেই দেখা গিয়েছে, বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়কদের শপথ পড়ানোর জন্য রাজ্যপালকে বিধানসভায় আমন্ত্রণও জানানো হয়। তবে এবার ২৬ জানুয়ারি রাজভবনে রাজ্য পুলিশের ব্যান্ডকে ঢুকতে না দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেন। কিন্তু রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সোচ্চার হননি। আর সেখান থেকেই রাজ্যপালকে বাজেট ভাষণে আমন্ত্রণের ভাবনা শুরু।
রাজ্যপাল বিধানসভা আসুন সেটা শাসকদল যেমন চাইছে তেমন বিরোধী দলও চায়। আর সবদিক বজায় রাখতে অধ্যক্ষ সেই সৌজন্য জারি রাখতে চান। তাই তাঁর কথায়, ‘রাজ্যপালকে আমরা আমন্ত্রণ জানাব। যাতে বাজেট অধিবেশনের শুরুতে এসে আমাদের এখানে বক্তব্য রেখে যান। রীতি মেনে সেই বক্তব্যের উপর আলোচনা হবে। তারপর বাজেট পেশ করা হবে।’ বিজেপি–আইএসএফ দুই দলের প্রতিনিধিকেই বিধানসভার অধিবেশন এবং সর্বদলীয় বৈঠকে থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।