বাংলায় জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। আর এই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ, মঙ্গলবার বিধানসভা উপস্থিত হয়ে কড়া প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী বিরোধী দলনেতাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর জবাবি ভাষণ বয়কট করে বিজেপি বিধানসভার বাইরে বসে ধরনা দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী যোগের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। আর তারপরই অগ্নিবানের মতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই ঘটনা নিয়ে বিধানসভার ভিতরে এবং বাইরে সরগরম হয়ে উঠল রাজনীতির ময়দান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাশ্মীরের জঙ্গিদের যোগ রয়েছে। এমনই অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা–সহ বিজেপি বিধায়করা। তার প্রেক্ষিতেই এদিন মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই মন্তব্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখবেন তিনি বলে আজ ভরা বিধানসভায় জানিয়েছেন। একইসঙ্গে বলেন, ‘জঙ্গি যোগ প্রমাণ করতে পারলে একদিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে চলে যাব। আমি নাকি হিন্দু ধর্মকে তাচ্ছিল্য করি আর মুসলিম লিগ করি। আমায় এসব শুনতে হবে এখন? জম্মু কাশ্মীরের জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পর্ক? এর চেয়ে তো মৃত্যু ভাল। আপনি যদি প্রমাণ করতে পারেন তবে আমি মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে চলে যাব। আর এই কথা প্রধানমন্ত্রীকে আমি চিঠি দিয়ে জানাব।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নৈরাজ্যের রিপোর্ট এবার প্রকাশ্যে, ইউনিটি কাউন্সিল–রাষ্ট্রসংঘের তথ্যে আলোড়ন
এদিন মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত কড়া ভাষায় বিরোধী দলকে মোকাবিলা করেছেন। প্রত্যেকটি ইস্যুতে ধরে ধরে বিঁধেছেন। যার জবাব অবশ্য এখনও বিরোধী দলের পক্ষ থেকে আসেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণাত্মক মেজাজের সঙ্গে বক্তব্য, ‘বাংলাদেশি জঙ্গিদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। বাংলার মানুষকে বলব, যদি প্রমাণ করতে পারেন, একদিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়ে চলে যাব। আপনি মুখের ভাষায়, বিরোধী দলনেতা হিসেবে যে অভিযোগ করেছেন সেটা আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানাব। এই কথা আপনি বলতে পারেন কিনা। আর যদি আমি জঙ্গি হই, প্রধানমন্ত্রী আমাকে জানাবেন।’
এছাড়া এই চ্যালেঞ্জ এবার বিরোধী দলনেতার উপর ভারী পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাতবারের সাংসদ, তিনবারের বিধায়ক এবং চারবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। বিজেপি এবং বিরোধী দলনেতাকে তাই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন। তাঁর কথায়, ‘যদি টেরোরিস্টদের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক প্রমাণ করতে পারেন তাহলে আমি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার ছেড়ে চলে যাব। বাংলায় মাফিয়াদের কোনও জায়গা নেই। সন্ত্রাসকারী, দাঙ্গাকারীদের আমরা জায়গা দিই না। গতকাল বিধানসভার বাইরে কী বলেছেন ? আমি ভিডিও দেখেছি। উনি বলেছেন হিন্দু ধর্মের কথা বলতে গিয়ে নাকি ওনাকে বহিষ্কার করা হয়েছে? কবে থেকে উনি হিন্দু ধর্মের নেতা হয়ে গেলেন? আপনি কথায় কথায় ধর্মের নামে রাজনীতি করেন। ধর্ম নিয়েই তো করে খাচ্ছেন। মনে রাখবেন, এটা বাংলা বলেই সম্ভব। কারণ, আমরা সকলকে বলার সুযোগ দিই। তা বলে ধর্মের নামে বিভাজন বরদাস্ত করব না। বেলুন ফাঁস করব? বাজে কথা বললে জনগণ থোতা মুখ ভোঁতা করে দেবে।’