বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, একদিনে বাংলায় ১২ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। সুতরাং বাংলায় এবার শিল্পের জোয়ার আসতে চলেছে তা বোঝাই যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই আজকের মতো বাণিজ্য সম্মেলন সমাপ্ত হয়েছে। আবার আগামীকাল সকাল থেকে শুরু হবে। তবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশন। ১২ তারিখ বাজেট অধিবেশন। তার প্রাক্কালে আজ, বুধবার বাণিজ্য সম্মেলন থেকে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানালেন, রাজ্যে তৈরি হচ্ছে ৬টি ইকোনমিক ফ্রেইট করিডর। যা আন্তঃরাজ্য পণ্য পরিবহণে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। তাতে উপকৃত হবে বাংলা।
এই ৬টি ইকোনমিক ফ্রেইট করিডর নিয়ে তাঁর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী সেই সূত্রে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই চারটে ইকোনমিক ফ্রেইট করিডর গড়ে তুলছি। তবে আরও দুটো গড়ে তোলা হবে। এই চারটে ইকোনমিক ফ্রেইট করিডরই যাবে ডানকুনির উপর দিয়ে। সেগুলি হল, পানাগড় থেকে কোচবিহার, রঘুনাথপুর–তাজপুর, ডানকুনি–ঝাড়গ্রাম এবং ডানকুনি–কল্যাণী। আর যে দুটি হবে সেগুলি হল, পুরুলিয়ার গুরুডি থেকে জোকা এবং খড়্গপুর–মোরগ্রাম করিডর’। তাই এখন এখানে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘যা হল তা ঠিক হল না’, বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পেয়ে বঞ্চনার অভিযোগ কৃষ্ণের
নবান্ন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই একাধিক দেশ থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষ করে জাপান বারবার অনুরোধ করেছে সে দেশে আসার জন্য। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আমন্ত্রণ অনেকগুলি পেলাম। সবগুলিতে যাওয়া তো সম্ভব হয় না। কারণ আমাদের রাজ্যে এখন ১৩ মাসে ১৫ পার্বণ অবস্থা। তবে বাংলার স্বার্থে দু’একটি জায়গায় যাওয়া উচিত। চেষ্টা করব।’ পানাগড় থেকে কোচবিহার ৬৩৯ কিলোমিটার সড়ক, রঘুনাথপুর থেকে ভায়া ডানকুনি হয়ে তাজপুর মোট ৩৯৮ কিমি। তারপর আর একটি ডানকুনি–ঝাড়গ্রাম ১৬০ কিমি এবং ডানকুনি–কল্যাণী ৪৩ কিমি করিডর গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। আর পুরুলিয়ার গুরুডি থেকে জোকা ২৩৪ কিমি এবং খড়্গপুর–মোরগ্রাম, ২৩০ কিমি করিডর হবে।
রাজ্যের সঙ্গে ভিন রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সুগম করতেই পরিকল্পনা করে এই ৬টি করিডর গড়ে তোলা হচ্ছে। যা রাজ্যের অর্থনীতিকেই চাঙ্গা করবে। ডানকুনিকে কেন্দ্র করে যে চারটি করিডর গড়ে উঠছে তাতে ডানকুনি থেকে পঞ্জাবের লুধিয়ানা পর্যন্ত আছে ভারতীয় রেলের ফ্রেট করিডর। সেটাও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বেশ কয়েকটি কাজ করেছিলেন। সেগুলি এখন তৈরি আছে। ফলে আরও উন্নত হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই ৬টি ইকোনমিক ফ্রেইট করিডর গড়ে উঠলে অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক সমৃদ্ধ হবে বাংলা। এই আভাসই শুনিয়েছেন মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়।