আজ, সোমবার কলকাতার রাস্তায় ‘সংহতি যাত্রা’ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে সব ধর্মের প্রতিনিধিরা পা মিলিয়েছেন। মন্দির, গুরুদ্বার, গির্জা, মসজিদ স্পর্শ করে সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিয়ে এগিয়ে যায় ‘সংহতি যাত্রা’। হাজরা মোড় থেকে শুরু করে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত জনসমুদ্র পরিণত হয় এই মিছিল। আসলে ধর্ম আর রাজনীতি যেন মিলে না যায়, ধর্মকে ঢাল করে রাজনীতি করলে হিংসা বাড়বে। তাই ধর্ম যার যার উৎসব সবার এই কথা শোনা যায় তৃণমূল সুপ্রিমোর গলায়। আর তখনই মমতার মুখে উঠে আসে বাবরি মসজিদ ভাঙার সময়ের কথা। এই কথা নিয়েই এখন তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
এদিন বিজেপিকে যেমন নেত্রী একহাত নেন, তেমন সিপিএমকেও কাঠগড়ায় তোলেন তথ্য দিয়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘তখন রাস্তায় কেউ ছিল না। আমি একা বেরিয়েছিলাম। জ্যোতি বসুর কাছে গিয়েছিলাম। বলেছিলাম, কোনও প্রয়োজন থাকলে বলুন। সেদিন পাম এভিনিউ, পার্ক সার্কাস–সহ শহরের বিভিন্ন জায়গা অশান্ত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সেই পরিস্থিতির মধ্যেও আমি মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করি।’ এই প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর কাছে যাওয়ার তথ্য মানতে পারেননি সিপিএম নেতারা। তাঁরা আজই ফোঁস করে ওঠেন।
এদিকে তৃণমূল সুপ্রিমোর আজকের সংহতি যাত্রায় উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও নাম না করে বিজেপিকে তুলোধনা করেছেন। তবে এই সংহতি মিছিল শেষে তৎকালীন সময়ের কথা মনে করিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘তখনও আমি সাহস হারাইনি। আমি রাতভর পাহারা দিয়েছি। একদিন শুধু দেখেছি, মাদার টেরেসা লোরেটো ডে হাউজে ছিলেন। সেদিন তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল।’ এই তথ্য অবশ্য তিনি আগেও দিয়েছেন। কিন্তু ওই ঘটনার সময় জ্যোতি বসুর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাতের তথ্যটি নতুন। সেটাই এখন হজম করতে পারছেন না সিপিএম নেতারা।
আরও পড়ুন: কলকাতা মেট্রোর পরিষেবায় কাটছাঁট, ৪০টির বেশি ট্রেনের চাকা গড়াবে না, মঙ্গলে কি অমঙ্গল?
অন্যদিকে আজ মুখ্যমন্ত্রী যখন এই নয়া তথ্য সবার সামনে এনেছেন তখন রে রে করে উঠেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। আজ মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই তথ্যের তীব্র বিরোধিতা করেন। রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর কাছে গিয়ে এই বিষয়ে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে তেতে ওঠেন সেলিম। যে সময়ের কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, তখন সেলিম ছিলেন সিপিএমের যুব নেতা। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সব চেয়ে বড় মিথ্যে কথা এটা। উনি একজন মিথ্যুক। সেটা প্রমাণ করেছেন। তখন তিনি গেলেন, কেন কোনও খবরের কাগজে সেটা এল না? বরং যখন দাঙ্গাবাজদের ধরা হয়েছিল, তখন তিনি থানায় গিয়েছিলেন। তাঁর অনুগামীরা পোস্টার লাগিয়েছিলেন। যাতে তাদের ছাড়া হয়।’