সাংসদ–অভিনেতা দীপক অধিকারীকে (দেব) পাশে নিয়ে কথা দিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইস্যু ছিল—ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান। সেই কথা এবার রাখতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার কিছুদিন আগে থেকেই। এবার রাজ্য সরকার আরও একধাপ এগিয়ে গেল। কেন্দ্রীয় সরকার ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ করেনি। এই আবহে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের টাকায় ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের মূল কাজ শুরু হতে চলেছে। বিধানসভায় সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানান, ১২৩৮ কোটি টাকায় ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ শুরু হবে। কিছু কাজ হয়েও গিয়েছে। এখন গড়ে তোলা হয়েছে বিশেষ প্রশাসনিক কমিটি। কাজের বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করার কাজ চলছে।
লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ঘাটালের মানুষজনের কাছে এই প্রকল্প করার জন্য রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দেয়। তখন সাংসদ–অভিনেতা দেব ঘাটালে সভা করতে এসে একই কথা বলেছিলেন। এমনকী সাংসদ ও তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও মানুষজনকে নিজের অধিকারকে সামনে রেখে ভোট দিতে আবেদন করেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল থেকে বিপুল পরিমাণ ভোট পেয়ে জেতেন দেব। আর এবার প্রতিশ্রুতি রক্ষার পালা। এই বিষয়ে সেচমন্ত্রী জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় কয়েকটি খাল এবং নদী সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে মাস্টারপ্ল্যানের কাজ পুরোদমে শুরু হবে।
আরও পড়ুন: সদস্য সংগ্রহে বিজেপি বিধায়কদের পারফরম্যান্স তলানিতে, সুনীলের কড়া ধমকে বৈঠকে শুভেন্দু
আশির দশক থেকে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের উদ্যোগ নেওয়া হলেও কাজ হয়নি। তার জেরে প্রত্যেক বছর অতিবৃষ্টিতে দুই মেদিনীপুর জেলায় ঘাটাল–সহ বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার কবলে পড়ে। এই দুই জেলার ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনা, ডেবরা, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, ময়না–সহ নানা এলাকায় বানভাসী পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেখানে রাজ্য সরকারের হাত ধরে এখানে হতে চলেছে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান। এই বিষযে সেচমন্ত্রী বলেন, ‘ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে ৬৫৭ বর্গ কিমি এলাকার ১০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। এটা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকে আটকে আছে বছরের পর বছর। তাই এটি সম্পূর্ণ রাজ্যের টাকায় তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী।’
বুধবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব ছিল। তখন সেচমন্ত্রী ভরা সভায় জানান, সুন্দরবন নদীবাঁধ সংস্কার–সহ একাধিক উন্নয়নের জন্য ৪১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার মুখে। এই প্রকল্পে ঋণ দেবে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের অনুমোদন পেলেই চূড়ান্ত ডিপিআর তৈরি করা হবে। এই প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ২০৫০ কোটি টাকা লাগবে বাঁধ তৈরি করার জন্য। ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ রোপণ এবং সুন্দরবনের মানুষের উন্নয়নের জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হবে।