স্যালাইন কাণ্ডে নবান্নের সভাঘর থেকে মৃত প্রসূতির পরিবারকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কর্তব্যে গাফিলতি না হলে প্রসূতি মাকে বাঁচানো যেত বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কথা তিনি জানিয়েও দিয়েছেন। আর মোট ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কড়া পদক্ষেপ করলেন চিকিৎসকদের দোষারোপ করে। আর চিকিৎসকদের ফাঁকিবাজি ঠেকাতে এবার ওটির গেট পর্যন্ত এবং অপারেশন থিয়েটরের ভিতরেও সিসিটিভি লাগানো উচিত বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজই মেদিনীপুর হাসপাতালে মৃত প্রসূতির পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী পরিবারের এক সদস্যকে দেওয়া হবে চাকরি। নবান্ন সভাঘর থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে সে কথা জানিয়েও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার সঙ্গে মুখ্যসচিব এবং স্বাস্থ্য সচিবের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ‘সব অপারেশন থিয়েটারের বাইরে গেট পর্যন্ত সিসিটিভি লাগান। যাঁরা আপত্তি জানাচ্ছে, তাঁদের বলুন প্লিজ ছুটি নিন। কারণ, আপনার ভুলের জন্য মানুষের মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। এক্ষেত্রে কারও বাধা মানব না।’
আরও পড়ুন: স্যালাইন কাণ্ডে মৃত প্রসূতির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, অর্থ–চাকরি দুটোই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
গত ৮ জানুয়ারি রাতে পাঁচ প্রসূতিকে বিষাক্ত স্যালাইন দেওয়ার ঘটনায় যত বিপত্তি ঘটে যায়। তার জেরে মৃত্যু হয় প্রসূতি মামণি রুইদাসের বলে অভিযোগ। বিষাক্ত স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তিন প্রসূতিকে গ্রিন করিডর করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আজ, বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয়েছে অসুস্থ রেখা দাসের সদ্যোজাত সন্তানের। আর তাই নবান্ন থেকে মেদিনীপুর কাণ্ডে ঘটনার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসকদের একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করলে এই পরিস্থিতি হতো না। অপারেশন থিয়েটারের গেটের আগে সিসিটিভি লাগাতে দেওয়া হয় না। কেন হয় না?’
আজ নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক থেকেই মামণি রুইদাসের মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘মৃতার পরিবারকে এককালীন ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করা হবে। পরিবারের এক সদস্যকে দেওয়া হবে চাকরি। স্যালাইন কাণ্ডে স্বাস্থ্যদফতর ও সিআইডির জোড়া তদন্তের দুটি রিপোর্ট মিলে গিয়েছে। তাই হাসপাতালের সুপার–সহ জুনিয়র এবং সিনিয়র মিলিয়ে মোট ১২ চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। সাসপেন্ড হওয়া ডাক্তারদের বিরুদ্ধে সিআইডি তদন্ত করবে। ওটির ভিতরেও থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। কিন্তু সিস্টেম থাকা উচিত। এটা ঠিক প্রাইভেট পেশেন্ট, অনেকে চায় না। আমরা দেখাব না। কিন্তু গেট পর্যন্ত কে যাচ্ছে, কে আসছে, কারা ভিতরে আসছে, কারা বেরোচ্ছে। সেটার তথ্য রাখা দরকার। কোনও ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগ উঠলে তখন সেটা খতিয়ে দেখা যাবে। আমাদের চিকিৎসকদের উচিত আরও মানবিক হওয়া।’