নবান্নের বৈঠকে ফুটপাথ দখল হয়ে যাচ্ছে বলে রণংদেহী মেজাজে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর রাতেই অ্যাকশন মুডে দেখা গেল পুলিশকে। কারণ পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার সন্ধ্যায় দেখা গেল, হাতিবাগান চত্বরে রাস্তায় নেমেছে পুলিশ। রাস্তার ধারে ফুটপাথের উপর আছে বহু ছোট দোকান। ত্রিপল খাটিয়ে দোকান রাস্তার দিকে এগিয়ে এসেছে। সব দোকানদারদের ধমক দিয়ে রাস্তার উপরে সামগ্রী সরানোর ব্যবস্থা করেন পুলিশকর্মীরা। আবার রাস্তার উপরে থাকা দোকান, ব্যবসার সামগ্রী সরিয়ে দিল বিধাননগর পুলিশও। সল্টলেক সেক্টর ফাইভে বাড়তি ড্রাইভ দেয় পুলিশ।
এদিকে শহরের অফিসপাড়া হয়ে উঠেছে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ। কাজের সুবাদে এখানে মানুষের যাতায়াত লেগেই থাকে। কিন্তু রাস্তার দু’পাশে হকারের দাপটে পথচলা দায় হয়ে উঠেছে। ফুটপাতে অস্থায়ী দোকানের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। তাই সমস্যায় পড়তে হয় পথচারীদের। আর তার জেরে বাড়ছে যানজটও। আর এইসব নিয়েই নবান্নে পুরপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেন বিধায়ক তথা মন্ত্রী সুজিত বসুকে। তারপরই পুলিশের এই নজরদারিতে চাপে পড়েন ব্যবসায়ীরাও। টাকা নিয়ে বাইরের লোকজনকে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ‘ইচ্ছামতো সুজিত বসু লোক বসাচ্ছেন’, নিজের মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই খড়গহস্ত মুখ্যমন্ত্রী
অন্যদিকে পুরসভাগুলির শ্রেষ্ঠ পরিষেবা এবং নিম্নমানের পরিষেবা নিয়েও সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সল্টলেক, রাজারহাট নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সল্টলেকের অবস্থা খুব খারাপ। রাজারহাটের অবস্থা আরও খারাপ। যে যেখানে পারছে টাকা নিয়ে লোক বসিয়ে দিচ্ছে। সল্টলেকে তো সুজিত বসু কমপিটিশন করে লোক বসিয়ে দিচ্ছে। সল্টলেকের কাউন্সিলররা কেন কাজ করে না? এবার কি আমাকে ঝাঁটা হাতে বের হতে হবে? বাইরের লোক এসে এখানে বসে পড়ছে। বাংলার আইডেনটিটি বদলে যাচ্ছে। কাজ না করলে ছুঁড়ে ফেলে দেবো।’ মুখ্যমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারি শুনে খুশি আমজনতাও।
এছাড়া মানুষের মনের কথা আজ বলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার তাহলে কাজ হবে। এই আশা করছেন সাধারণ মানুষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘কোনও ব্যক্তিকে পোষার জন্য এখানে আসিনি। মানুষকে দেখার জন্য এখানে এসেছি। কোন পার্টির এমএলএ দেখার দরকার নেই। প্রশাসনকে বলে দিচ্ছি। যারা লোভ করবে তাদের মুখ লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে বন্ধ করে দিন। টেন্ডার আর লোকালি হবে না। টাকা তোলার লোক আমি চাইছি না। সেবা করার লোক চাইছি। জনসেবক চাই। সল্টলেক দেখে আমার লজ্জা লাগছে। এআরডি অফিসের সামনে একটা করে ত্রিপল লাগাচ্ছে আর বসে যাচ্ছে।’ এরপরই বেআইনিভাবে দখলদারির জায়গায় অভিযানে নামেন পুলিশকর্মীরা। রাস্তার উপর উঠে আসা দোকান সরাতে তৎপর হয় পুলিশ। জবরদখল ঠেকাতে হাইপাওয়ার কমিটি গঠন করেছে নবান্ন।