জলের পাইপ লাইন বসাতে রাস্তা খোঁড়া হচ্ছে। কিন্তু কাজ শেষে তা ঠিকমতো মেরামত করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ওই অবস্থাতেই ফেলে রাখা হচ্ছে খোঁড়া রাস্তাকে। তাতে সাধারণ মানুষের চলাফেরা করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই অবস্থায় আবার আর একটি বিভাগ রাস্তা সারাতে এসে জলের পাইপ লাইনকেই ফাটিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রশাসনের এক দফতরের সঙ্গে অন্য দফতরের সমন্বয় না থাকাতেই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আর রাজ্য সরকারের খরচও বাড়ছে দু’বার করে একই কাজ করতে গিয়ে। এবার এই সব নিয়েই এদিন বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই দিলেন কড়া বার্তা।
এদিকে এই বৈঠকে সমস্যা সমাধানের রাস্তা বাতলে দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি কাজে যুক্ত অফিসারদের কড়া ধমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সরকারের একটা দফতরের সঙ্গে অন্য দফতরের সমন্বয়ের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। কেউ পাইপ ভেঙে পালাবে, মানুষ জল পাবে না, এই জিনিস চলতে পারে না। একই কাজ দু’বার করে করা যাবে না। কর্মশ্রী প্রকল্পের অধীনে বহু লোককে কাজে লাগানো হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় শ্রমিকদের কাজে লাগানো হয়েছে। মাটি কাটা এবং মেরামতে সহায়তার কাজে অদক্ষ শ্রমিকদের কাজে লাগানো হয়েছে। তার ফলে ৫ কোটি শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘দ্রুত পাহাড়ের তিনটি পুরসভায় নির্বাচন হবে’, বিধানসভায় দাঁড়িয়ে আশ্বাস দিলেন পুরমন্ত্রী
অন্যদিকে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্তারা, প্রত্যেকটি জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপাররা। ওই বৈঠকে ধমকের সুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘সরকারের টাকা নষ্ট করতে আপনাদের কেন গায়ে লাগে না? মনে রাখবেন, ওটা জনগণের টাকা। সেই টাকা কেউ অপব্যবহার করবে, এটা আমি টলারেট করব না। যে ডিপার্টমেন্ট এটা ভাঙবে তার হেড থেকে হেড ক্লার্ক সকলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করব। ডিএমরা নিশ্চয়ই জানেন, আমি জেলায় গিয়ে সার্কিট হাউসে থাকলেও নিজের বিল মিটিয়ে আসি। খাবার খরচও দিই। যে দফতর রাস্তা খোঁড়ার পর মেরামত করছে না, তাদের উপর টাকাটা চাপবে। যে অফিসার কাজ করেছেন, তাঁর উপরেও চাপবে।’
এছাড়া পুলিশ সুপারদেরও কড়া নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কড়া নির্দেশ দিয়ে তাঁর তোপ, ‘রাজ্য সরকার নিজের খরচে পথশ্রী প্রকল্পের রাস্তা করেছে। ওটা জনগণের টাকা। কেন অপব্যবহার হবে? যে দফতর এটা মানবে না তার প্রধান থেকে শুরু করে হেডক্লার্ক পর্যন্ত আইনত ব্যবস্থা করা হবে। এখন থেকে গ্রামীণ রাস্তায় বড় গাড়ি যাবে না। কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। আমরা নিজের খরচে রাস্তা করছি। আর কিছু লোক টাকার লোভে সেই রাস্তা দিয়ে বড় গাড়ি যাতায়াতের অনুমতি দিচ্ছে। ফলে ওই রাস্তাগুলি ভেঙে যাচ্ছে। এমনভাবে টেন্ডার করা হচ্ছে যাতে একই গ্রামে এক একজন ঠিকাদার একাধিক প্রকল্পে একাধিক জায়গায় কাজ করছে। একটা প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই আর একটা প্রকল্পে ঢুকে গেল। কোনওটাই হচ্ছে না।’