আর কদিন পর বড় অনুষ্ঠান হবে কলকাতা শহরে। জনসমুদ্র আছড়ে পড়বে ধর্মতলায়। কারণ সেদিন ২১ জুলাই। তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবস কর্মসূচি। দলের সব থেকে বড় কর্মসূচি এটিই। এখান থেকেই রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বার্তা দিয়ে থাকেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রত্যেক জেলা থেকে কলকাতায় নেতা–কর্মী–সমর্থকরা এসে থাকেন। তাঁদের যাতায়াতের জন্য ট্রেনের প্রয়োজন হয়। এই বিষয়ে আজ, সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি থেকে শুরু করে শহরে যানজট এবং মূল্যবদ্ধি নিয়ে নানা কথা বলেছেন। ডিভিসি জল ছাড়া নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দেগেছেন এবং রেলকে কড়া বার্তা দিয়েছেন।
এদিকে আগামীকাল মঙ্গলবার নবান্নে বাজার কমিটির সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কথা তিনি নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেল ৪টে নাগাদ বাজার কমিটির সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। শাক–সবজির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সেখানে কথা বলা হবে। সামনে মহরম। সেদিন যাতে কোনও পথ দুর্ঘটনা না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই ২১ জুলাই নিয়ে এখন থেকে পুলিশকে সক্রিয় হতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সে দিন যাতে কোনও পথ দুর্ঘটনা না হয় সেটা দেখতে হবে পুলিশকে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসবেন। উত্তরবঙ্গ থেকে লোক আসার জন্য তোমরা ট্রেন আমাকে ভাড়া দিলে আমরা টাকা দেব। ভাড়া না দিলে এতজন মানুষকে নিরাপদে নিয়ে আসার দায়িত্ব তোমার। অতিরিক্ত কামরাও ভাড়া দিতে পারো আমাদের। ১৮ জুলাই থেকে মানুষ আসতে শুরু করবেন।’
আরও পড়ুন: চোপড়া কাণ্ডে এবার কাঠগড়ায় মহম্মদ সেলিম–অমিত মালব্য, এফআইআর দায়ের নির্যাতিতার
এদিন কেন্দ্রীয় সরকারকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ বাংলা যে বন্যা নিয়ে ভুগছে তার জন্য এনডিএ সরকারকে তোপ দেগেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘গঙ্গার ভাঙনের বিষয়টি কেন্দ্রের দেখার কথা। ১০–১২ বছর ধরে দেখছে না। ফরাক্কার ড্রেজিং করেনি। বাংলাদেশের সঙ্গে যখন চুক্তি হয় তখন কথা ছিল, বাংলাদেশে যে জল যাচ্ছে তাতে আমাদের যাতে সমস্যা না হয় সেটা দেখা হবে। ড্রেজিং করা হবে। ভাঙনে অনেক বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে। ৭০০ কোটি টাকার প্যাকেজ তৈরি হয়। আমি এমপি ছিলাম, জানতাম। আজ পর্যন্ত দেয়নি। উত্তরবঙ্গে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। আমি রিপোর্ট নিয়ে দেখেছি। দরকারে যোগাযোগের জন্য নম্বর দেওয়া হল। ভূমিক্ষয়ের সমস্যাও রয়েছে।’
হাতে আর ১৩ দিন বাকি। তারপরই গোটা কলকাতা অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে একুশে জুলাই কর্মসূচির জন্য। আর তাই মুখ্যমন্ত্রী আগাম সতর্ক করে দিলেন। আজ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘২১ জুলাই একটাই বড় প্রোগ্রাম। অনেক লোকজন আসবে। গাড়ি আসবে। যেন কোনও দুর্ঘটনা না হয় পুলিশ দেখবে। অনেক সময় গাড়ির চালকের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। অনেকের মৃত্যু হয়। তা যেন না ঘটে। আমি মুখ্যসচিবকে বলব কাল রেলের সঙ্গে মিটিং করতে। আমরা ভাড়া চাইলে রেল টাকা নেয়। সেদিন রাশ ক্লিয়ার করা রেলের দায়িত্ব। পুর দফতরকে বলব দ্রুত জল সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। হাওড়ায় টাকা আগেই দেওয়া হয়েছে। রেলকে বলতে হবে। রেল কেন নিকাশির ব্যবস্থা করবে না। মেট্রোর ময়লায় ড্রেন বন্ধ হচ্ছে। এটা ওরা করে না। জল জমলে আবার ডেঙ্গি হবে।’