ঘটনাস্থল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সেখানে ‘বিষাক্ত’ স্যালাইন কাণ্ডে এখন রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড়। স্বাস্থ্য প্রশাসন তো তদন্ত করবেই। প্রসূতি মৃত্যুর কারণ এবার খুঁজে দেখবে সিআইডি। তারপরই আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট দেবে রাজ্যের গোয়েন্দারা। আজ, সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এই কথা জানিয়ে দেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। এই স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে মনোজ পন্থ স্পষ্ট জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী সাফ নির্দেশ দিয়েছেন কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। অর্থাৎ এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও কিছু সহ্য করবে না সেটা মুখ্যসচিবকে জানিয়ে দিয়েছেন।
এই ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ সে কথাও মুখ্যসচিবকে জানিয়ে দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। আর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই সিআইডি তদন্তের কথা জানিয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার পর জুনিয়র ডাক্তাররা সরিয়ে দিতে বলেছিলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে। তখন মুখ্যমন্ত্রী ভরসা রেখেছিলেন এই স্বাস্থ্যসচিবের উপরই। এবার তিনিই রেগে গিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিবের উপর। সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যসচিবকে। এবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে বিষাক্ত স্যালাইন কাণ্ডের ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভের মুখে স্বাস্থ্যসচিব। সুতরাং তাঁকে সরিয়ে দেবেন কিনা এখন সেটাই দেখার বিষয়।
আরও পড়ুন: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ কি মানেনি পরিবহণ দফতর? বেসরকারি বাসে নেই টোল ফ্রি নম্বর
আজ, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মুখ্য়সচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন মুখ্য়সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে। আর সেটাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই। মুখ্যমন্ত্রী এতটাই রেগে গিয়েছেন যে, স্বাস্থ্যসচিবের মুখ দেখতে চাইছেন না। তাই মুখ্যসচিবকে দিয়ে কড়া ধমক দেওয়ালেন। স্বাস্থ্য সচিবের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী কেন এই ঘটনা ঘটল? তার জবাবও চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সন্তানের জন্ম দেন চারজন প্রসূতি। তারপর তাঁদের স্যালাইন দেওয়া হয়। ওই স্যালাইন দেওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন চার প্রসূতি বলে অভিযোগ। এমনকী বৃহস্পতিবার একজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়। বাকি তিনজনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ায় রবিবার গ্রিন করিডর করে তাঁদের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এখন সেখানে চলছে চিকিৎসা। যে কাজ স্বাস্থ্যসচিবের করা উচিত ছিল, সেটা করতে হয় খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে। এই ঘটনার পর থেকেই ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। কেন এমন স্যালাইন দেওয়া হল? তা কোথা থেকে এল? এসব মুখ্যমন্ত্রীর দেখা কাজ নয়। তাই মুখ্যসচিবকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, ‘এই ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না।’ তখনই স্বাস্থ্যসচিবের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি বলে সূত্রের খবর।