দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করেও ডিএ বাড়েনি রাজ্য সরকারি কর্মীদের। এদিকে পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে বকেয়া ডিএ আদায়ের জন্যে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে বহু বছর ধরে। এই আবহে এবার অর্থ দফতর নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শোনা গেল খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। গতকাল এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'অর্থ দফতরের সচিব প্রভাত মিশ্র খুব ভালো মানুষ। কিন্তু তোমার দফতরে অনেক বামপন্থী লোক আছে।' উল্লেখ্য, বিগত বছরগুলিতে ডিএ সহ একাধিক ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন সরকারি কর্মীরা। এমনকী আদালতে মামলাও হয়েছে। ডিএ মামলায় তো সরকার পরপর হেরেছে হাই কোর্টে। তবে আপাতত মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে আছে। এরই মাঝে 'বাম সরকারি কর্মীদের' নিয়ে তোপ মমতার। (আরও পড়ুন: নয়া বছরের শুরুতেই বড় খবর? ডিএ মামলার শুনানি নিয়ে কী জানা যাচ্ছে?)
আরও পড়ুন: হাসিনাকে ফেরত চাইতে 'সব কাজ' শেষই করেনি ঢাকা, কী করবে দিল্লি?
মমতার কথায়, 'অর্থ দফতরকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট বানিয়ে দিয়েছে। কয়েকজন বাদ দিয়ে বেশিরভাগ লোকই বামপন্থী রাজনীতির আলোচনা করে ওখানে বসে। দরকার হলে নতুন লোক নিয়ে এসে কাজ করাও। আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি। নাহলে বলতাম না। ফাইলের পর ফাইল জমেছে। এটা মিটিং-মিছিল করার জায়গা নয়, এটা কাজের জায়গা।' প্রঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরে ডিএ সহ একাধিক ইস্যুতে সরকারি কর্মীদের আন্দোলনে চাপে পড়তে হয়েছে সরকারকে। এই আবহে অর্থ দফতরের কর্মীদের ভূমিকায় আগেও উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে ডিএ আন্দোলনে অংশ নেওয়া সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে 'কু-কথা' বলারও অভিযোগ আছে মমতার বিরুদ্ধে। এদিকে ডিএ আন্দোলনকারীদের 'শাস্তিমূলক বদলি' করার অভিযোগও রয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে। (আরও পড়ুন: ঘুষকাণ্ডে আদানির বিরুদ্ধে এখনই কোনও পদক্ষেপ নয়, জানিয়ে দিলেন চন্দ্রবাবু)
উল্লেখ্য, বর্তমানে ১৪ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। আর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ বেড়ে ৫৩ শতাংশ হয়েছে। এই আবহে কেন্দ্রীয় কর্মীদের সঙ্গে রাজ্যের কর্মচারীদের ডিএ-র ফারাক বেড়েছে আরও। গতবছর বড়দিনে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বাড়ানো হয়েছিল। তবে এবার আর সেই সংক্রান্ত কোনও ঘোষণা করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে ডিএ আন্দোলনকারীদের দাবি, প্রাপ্য আরও ৩৯ শতাংশ ডিএ দিতে হবে রাজ্যকে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে ১৯৭০ সালের পে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কারণে কেন্দ্রে যখন পঞ্চম বেতন কমিশন কার্যকর হয়, তখন রাজ্যে চতুর্থ কমিশন আসে। আর কেন্দ্রে সপ্তমের জায়গায় রাজ্যে বর্তমানে ষষ্ঠ বেতন কমিশন কার্যকর হয়েছে।