আজ, বৃহস্পতিবার আবারও নবান্নে বৈঠকে বসে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক থেকে শুরু করে মন্ত্রী, আমলা, পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা সকলেই শুনলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। তবে আজকের রিপোর্ট কার্ডে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু সুনজরে চলে এল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আগের বৈঠকের দিন বকা দিয়েছিলেন মন্ত্রী সুজিতকে। এবার তাঁর কাজের প্রশংসা করলেন। সুতরাং যে টেনশন এবং চাপের মধ্যে ছিলেন সুজিত বসু সেখান থেকে অনেকটা মুক্তি পেলেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাই এখন সুজিত বসুর মনে খুশির হাওয়া।
বিধাননগর পুরনিগমের কাজ নিয়ে আগে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ইচ্ছেমতো অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ এবং বেনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন। আবার মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিলেন দমকলমন্ত্রী তথা বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু। তখন থেকেই চাপে ছিলেন মন্ত্রী। কিন্তু আজ, বৃহস্পতিবার হকার উচ্ছেদ নিয়ে বৈঠকে সেই সুজিত বসুই মুখ্যমন্ত্রীর সুনজরে চলে এলেন। কারণ কেষ্টপুর খাল সংস্কার একটি ভাল কাজ বলে প্রশংসা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কালার কম্বিনেশন ভাল নয়। আমাদের রাজ্যের একটা রং আছে—আকাশি। যা তা রং করে দিলেই তো হল না।’
আরও পড়ুন: ‘বেশি লোভ ভাল নয়, সংবরণ করুন’, নেতা থেকে পুলিশ সকলকে কড়া বার্তা দিলেন মমতা
মুখ্যমন্ত্রীর আগের তিরষ্কার থেকে ঘুরে গিয়ে সুজিত বসুর প্রশংসার নেপথ্যে রয়েছে ভাল কাজ। আর সেটাই তুলে ধরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুজিত বসু। সবার সামনে মুখ্যমন্ত্রীর থেকে প্রশংসা পেয়ে অতীতকে ভুলে গেলেন তিনি। এমনকী হেসে উত্তর দেন দমকলমন্ত্রী। সুজিত বসুর সঙ্গে যখন মুখ্যমন্ত্রী কথা বলছিলেন তখন পিন পড়ার নীরবতা ছিল সেখানে। আসলে সবাই তখন ভয়ে তটস্থ ছিলেন। কারণ প্রত্যেকের রিপোর্টই রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। কোনটা খুলবে কখন তা কেউ বুঝতে পারছিলেন না। তবে সুজিত বসু প্রশংসা পেতেই অনেকে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন।
আজ বৈঠক চলাকালীনই সুজিত বসুর সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশংসা করে বলেন, ‘ওই খালের কাজ তোমরা ভালই করেছো সুজিত। কী যেন নাম? কেষ্টপুর খাল। ওটা ভাল কাজ হয়েছে। কিন্তু তার চারপাশের ওই কালার কম্বিনেশনটা ঠিক লাগেনি। আমাদের রাজ্যের তো একটা নির্দিষ্ট রং আছে—আকাশি। সেটাই তো করতে পারত। এত রং কেন হবে? আমি একদম পছন্দ করি না। দেখুন না, নতুন মেট্রো স্টেশনগুলিতে সব গেরুয়া রং করেছে।’ এই কথার পর সুজিত বসু আনন্দিত হলেও এবার রং পরিবর্তনের কথা ভাবছেন দমকলমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর। এলাকার বিধায়ক সুজিত বসু কাজের মানুষ বলেই পরিচিত। তাই অবশেষে এল প্রশংসা।