বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার আসার আগে থেকেই অশান্ত হয়ে ওঠে ওপারের বাতাবরণ। সেই তপ্ত আবহে এখন হিন্দুদের জীবননির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে ওপার বাংলায় বলে অভিযোগ। ভারত–বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করেছে। সেখানে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বড় অবদান ছিল ভারতীয় সেনার। ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনা এবং বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল পাকিস্তানের ৯৩ হাজার সেনা। তখন থেকেই প্রত্যেক বছর কলকাতায় এই দিনে বিজয় দিবস উদযাপন হয়। আর আজ রেসকোর্সে ভারতীয় সেনার বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের সম্পর্কে অতীতের স্মৃতি যেমন রোমন্থন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তেমন বর্তমান বাংলাদেশের পরিস্থিতি তিনি জানেন না বলেছেন। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে জানায় না। এভাবেই কেন্দ্রকে আজ, সোমবার ঠুকলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও বাংলার ভূমিকা কখনই ভুলতে পারি না। যাঁরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছেন, তাঁদের কখনই ভুলতে পারব না। যদিও বর্তমান পরিস্থিতি কী আমি জানি না। আমাকে জানানো হয় না। এই বিষয়ে কিছু বলাটা আমার পক্ষে ঠিক হবে না। বিষয়টা ভারত সরকার ও ভারতীয় সেনার হাতে।’
আরও পড়ুন: সর্বহারা সিপিএম নেতার আছে দোতলা বাড়ি, ভুল তথ্য দিয়ে আবাসে নাম তুলে ধরা পড়লেন
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সামিল হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীও। দিনটা ছিল ১৬ ডিসেম্বর। ওই বছরই নয়াদিল্লিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমপর্ণ করেছিল পাক–বাহিনী। তারপর থেকে প্রত্যেক বছরই দিনটিকে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ফোর্ট উইলিয়ামে বিশেষ অনুষ্ঠান হয় ইন্টার্ন কমান্ডের। এই বছরও তা ঘটল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই অনুষ্ঠানে সাধারণত আসেন না। তবে এবার ব্যাতিক্রম ঘটল। তিনি এলেন। আর তাঁর বক্তব্য, ‘আমার বাবা স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। যখন আমি ক্লাস টু–থ্রিতে পড়ি, তখন তিনি মারা যান। কিন্তু প্রত্যেকদিন তিনি আমায় বলতেন কীভাবে ১৯৬৫ সালে ইন্দো–চিন যুদ্ধে আমাদের সেনারা কাজ করেছিলেন। তাঁদের আত্মত্যাগের কথা। শুনতাম ৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের কথা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা।’
এখন বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসে আশ্রয়ে রয়েছেন শেখ হাসিনা। আবার ওপারে ইসকন মন্দিরের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে রেখেছেন বাংলাদেশ প্রশাসন। সেখানে বিজয় দিবসে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘মনে পড়ে যাচ্ছে সেই পরিচিত গান। জো শহিদ হুয়ে হ্যায় উনকি জারা ইয়াদ করো কুরবানি। আজ লতাজি নেই কিন্তু আমাদের শহিদ জওয়ানদের জন্য গাওয়া তাঁর এই গান চিরকাল অমর হয়ে থাকবে। ভারতীয় সেনা নিয়ে আমরা সবসময় গর্ববোধ করি। তাঁরা সবসময়ই সাহসিকতা সঙ্গে কাজ করে।’