বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যের একটি মন্তব্য রাজ্য–রাজনীতিকে তোলপাড় করে দিয়েছে। ‘প্রায়শ্চিত্ত’ মন্তব্য কংগ্রেসের অন্দরে বিতর্ক চরমে তুলেছে। এবার এই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস নেতার পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ঠিকই তো বলেছেন। অর্থাৎ কংগ্রেস তো এখন প্রায়শ্চিত্তই করছেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করার জেরে আজও খেসারত দিতে হচ্ছে কংগ্রেসকে। এই কথা বলেছেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। তারপর থেকেই কংগ্রেসের অন্দরে তুসের আগুন জ্বলছে।
এবার সেই প্রদীপ ভট্টাচার্যের কথাতেই সিলমোহর দিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ষীয়ান কংগ্রেসের নেতা এমন মন্তব্য করলেও পাশে থাকা এখনকার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেছেন, তিনি শুনতে পাননি। ১৯৯৮ সালে বাংলায় কংগ্রেস ভেঙে জন্ম নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। যা নিয়ে ২৭ বছর পরেও আক্ষেপ করেছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। রবিবার সোমেন মিত্রের মূর্তি উন্মোচনের অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘যেদিন বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে বহিষ্কার করা হয়, তখন সোমেন মিত্রের ফোন এল। সীতারাম কেশরী বলেছেন, ওকে তোমায় বহিষ্কার করতে হবে। আমি সোমেনকে বলেছিলাম. তুমি করো না। কিন্তু সোমেনের উপরে চাপ তৈরি হয়েছিল বলে করতে বাধ্য হয়েছিল। এই প্রায়শ্চিত্তটা কংগ্রেস দলকে আজও করতে হচ্ছে। আমি জানি না, এর হাত থেকে আমরা কখন, কীভাবে নিস্তার পাবো।’
আরও পড়ুন: মন্ত্রী–বিধায়কদের রাখা হয়েছে নদীঘাটে, কে–কোথায় থাকবেন? দায়িত্ব দিলেন মমতা
প্রদীপ ভট্টাচার্য লোকসভার প্রাক্তন সাংসদ, রাজ্যসভারও প্রাক্তন সাংসদ। কংগ্রেস আমলে রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। ২০১১ সালে পরিবর্তনের সময় প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি। তখন বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের জোট সঙ্গী কংগ্রেস। তৃণমূলের সহায়তাতেই ২০১৭ সালে কংগ্রেসের হয়ে রাজ্যসভায় যান প্রদীপ। এবার সেই প্রদীপ পেয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিলমোহর। গঙ্গাসাগর থেকে ফেরার পর মুখ্যমন্ত্রীকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন। যার জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘উনি তো ঠিকই বলেছেন।’
এখন মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে প্রদীপবাবু খুশি হলেও তোলপাড় হয়ে গিয়েছে কংগ্রেসে। কারণ শহর থেকে জেলায় যেখানেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার যাবেন সেখানেই এই ইস্যুতে প্রশ্নের মুখে পড়বেন। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও প্রদীপ ভট্টাচার্যকে সমর্থন করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘উনি সঠিক কথা বলেছেন। কংগ্রেস নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিপিএম বিরোধী লড়াইটাকে স্বীকৃতি দেয়নি। কোণঠাসা করেছিল, বহিষ্কার করেছিল। তার ফল কংগ্রেস ভুগছে। মমতা নতুন দল গঠন করে সিপিএমের পতন ঘটিয়েছেন।’ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘ঠিক বলেছেন মন্তব্য ছাড়া একটি শব্দও খরচ করেননি।