ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ মোকাবিলায় এবার বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে রাজ্য সরকার। আজ মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে একাধিক জেলায় ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কলকাতা শহরে ‘দানা’র প্রভাব পড়বে বলে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস। এই কারণে ৮টি জেলায় ২৩ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে স্কুল–কলেজ। বন্ধ থাকবে ফেরি পরিষেবাও। সবসময় সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ডিএম–এসপিদের। নবান্ন এবং জেলা স্তরেও করা হবে কন্ট্রোল রুম। এখন বিপজ্জনক এলাকার বাসিন্দাদের সরানোর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। আর তখনই তোপ দাগলেন ডিভিসিকে।
এদিকে আজ ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এই গভীর নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে আগামীকাল বুধবার প্রবল ঘূ্র্ণিঝড়ের রূপ নেবে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘূর্ণিঝড় পৌঁছবে বাংলা ও ওড়িশার উপকূলে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একদিন আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ১৩ তারিখ থেকেই সমুদ্র এবং সংলগ্ন এলাকায় গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বন্ধ রাখা হচ্ছে ফেরি সার্ভিস। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সাত জেলায় পাঠানো হচ্ছে প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারিদের।’
আরও পড়ুন: রানাঘাট ও হালিশহর পুরসভাকে চিঠি দিল সিবিআই, কলকাতা হাইকোর্টে গেলেন কুন্তল
অন্যদিকে দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে ভারী বৃষ্টির সময় ডিভিসি অতিরিক্ত জল ছেড়ে দেওয়ায় দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তাতে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তার জেরে ডিভিসি–তে থাকা প্রতিনিধি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। আজ মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে সুর চড়িয়ে বলেন, ‘পরিস্থিতি মোকাবিলায় একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। ডিএম–এসপিদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বহু মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদে নিয়ে আসা হয়েছে। যাঁরা জনপ্রতিনিধি তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এলাকায় থাকতে, মানুষের সহযোগিতা করতে। পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যখন বৃষ্টিতে ভাসব, তখন তোমরাও জল ছেড়ে আরও ভাসিয়ে দেবে এটা হবে না। আমি আগে থেকেই জানিয়েছি, এই কদিন যেন ডিভিসি জল না ছাড়ে।’
এছাড়া আগামীকাল ২৩ অক্টোবর থেকে তিনদিন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, কলকাতা, পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রামে স্কুল ছুটির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ফেরি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পর্যটকদের এখন থেকেই সতর্ক করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই উপকূলের জেলাগুলিতে শুরু হয়েছে মাইকিং। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘কখন কী হবে তো বলা যায় না, তাই আগামীকাল থেকেই আমরা সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি।’