এআইসিপিআই অনুযায়ী ডিএ-র দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে সরকারি কর্মীদের সংগঠন সংগামী যৌথ মঞ্চ। এই আবহে গত ২২ তারিখ থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত মন্দিরতলার বাস স্ট্যান্ডে ধরনা অবস্থান করেন আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীরা। আর সেই অবস্থান মঞ্চে এসে অরাজনৈতিক ভাবে ডিএ আন্দোলনের পাশে থাকার বার্তা দিলেন বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ধরনাস্থল থেকে নন্দীগ্রামের বিধায়ক গতকাল বলেন, 'সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ অরাজনৈতিক সংগঠন। তারা রাজ্য সরকারের দ্বারা বঞ্চিত, পীড়িত, শোষিত এবং আক্রান্ত। যতগুলি কর্মসূচিতে আমাকে ডাকা হয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং ভোটের পাটিগণিতের অঙ্কের বাইরে দাঁড়িয়ে আসার চেষ্টা করেছি।' (আরও পড়ুন: বছর শেষে বাংলার সরকারি কর্মীদের ডিএ ইস্যুতে বৈঠক হল, কী আলোচনা হল তাতে?)
আরও পড়ুন: 'মাথা ব্যথা' দূর হয় ক'দিন আগে, এসপ্ল্যানেড-শিয়ালদা মেট্রো রুট নিয়ে রইল বড় আপডেট
এরপর রাজ্য সরকারকে তোপ দেগে শুভেন্দু বলেন, 'পুজোয় চাঁদা দিচ্ছেন, ৮০ হাজার। ইমাম-মোয়াজ্জেমদের দিয়েছেন, পুরোহিতদের দেবেন বলছেন। বিধানসভা ভোট কঠিন হলে দেখা যাবে লক্ষ্মীর ভান্ডারে ১৫০০ টাকা দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি কেন্দ্রীয় হারে ডিএ, আর চাকরি তিনি দেবেন না।' গতকাল ডিএ আন্দোলন নিয়ে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের প্রশংসা করে শুভেন্দু বলেন, 'অত্যাচারী মুখ্যমন্ত্রীর কয়েক দফায় ভিক্ষার মতো করে ছুড়ে দেওয়া ৩-৪-৫ শতাংশ ডিএ আপনারা পাচ্ছেন, সেটা সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আপসহীন লড়াইয়েরই ফল।' (আরও পড়ুন: হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে হম্বিতম্বি শেষ? 'প্র্যাক্টিকাল কথা' বলল ইউনুসের সরকার)
উল্লেখ্য, বর্তমানে ১৪ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। আর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ বেড়ে ৫৩ শতাংশ হয়েছে। এই আবহে কেন্দ্রীয় কর্মীদের সঙ্গে রাজ্যের কর্মচারীদের ডিএ-র ফারাক বেড়েছে আরও। এই আবহে ডিএ আন্দোলনকারীদের দাবি, প্রাপ্য আরও ৩৯ শতাংশ ডিএ দিতে হবে রাজ্যকে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে ১৯৭০ সালের পে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কারণে কেন্দ্রে যখন পঞ্চম বেতন কমিশন কার্যকর হয়, তখন রাজ্যে চতুর্থ কমিশন আসে। আর সপ্তমের জায়গায় বর্তমানে ষষ্ঠ বেতন কমিশন কার্যকর হয়েছে। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ষষ্ঠ বেতন কমিশনের অ্যাকচুয়াল এফেক্ট ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারি। আর পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চম বেতন কমিশনের নোশনাল এফেক্ট ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে। এরপর কেন্দ্রের ষষ্ঠ বেতন কমিশনের ডিএ মিলতে শুরু করে ২০০৬ সালের ১ জুলাই থেকে। আর রাজ্যে পঞ্চম বেতন কমিশনের ডিএ দেওয়া শুরু হয় ২০০৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে (২১ মাস বকেয়া)। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সপ্তম বেতন কমিশনের অ্যাকচুয়াল এফেক্ট ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি। আর পশ্চিমবঙ্গের ষষ্ঠ বেতন কমিশনের নোশনাল এফেক্ট ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে। এরপর কেন্দ্রের সপ্তম বেতন কমিশনের ডিএ মিলতে শুরু করে ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে। আর রাজ্যে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের অ্যাকচুয়াল এফেক্ট হয় ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে। ডিএ দেওয়া শুরু হয় ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে (৫৪ মাস পর থেকে)।