সম্প্রতি বাংলায় বন্যপ্রাণীদের হানা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বাংলার বিভিন্ন জেলায় প্রায়ই লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে হাতি। জলপাইগুড়ি, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, আলিপুরদুয়ার সহ উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় হাতির তাণ্ডব লেগেই রয়েছে। এর ফলে যেমন প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে তেমনিই বিঘার পর বিঘা ফসল নষ্ট হচ্ছে। ইতিমধ্যেই হাতির হানা রুখতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে নবান্ন। তারপরেও হাতি হানায় ফসল নষ্টের ফলে ব্যাপক সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা । অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ ওঠে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের জন্য ক্ষতিপূরণের দেওয়ার কথা থাকলেও তাতে অনেক দেরি হচ্ছে। এছাড়াও একাধিক অনিয়মের অভিযোগও শুনতে পাওয়া যায়। এই সমস্যার সমাধানে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: হাতির হানায় প্রাণহানি রুখতে তৈরি হবে শৌচালয়, ৭টি জায়গায় করা হবে করিডর
জানা যাচ্ছে, হাতির হানায় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য মোবাইল অ্যাপ তৈরি করছে রাজ্য সরকার। এই অ্যাপের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আর্থিক ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাতে পারবেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যে ভুয়ো নথি বানিয়ে ক্ষতিপূরণের জন্য অনেকে আবেদন করে থাকেন। তবে এর মাধ্যমে তথ্যের সত্যতা যাচাই করবেন বন দফতরের আদায়কারিকরা। এর ফলে যেমন জালিয়াতি কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, তেমনি দ্রুত ক্ষতিপূরণ মিলবে বলে মনে করছেন আধিকারিকরা।
অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে অনেক সময় লেগে যায়। তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে একাধিক অভিযোগ এসেছে। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ এবং জঙ্গলমহলে প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই নিয়ে সরব হন। তারপরেই স্থায়ী সমাধানের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি দফতরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরে রাজ্যের তথ্য প্রযুক্তি দফতর অ্যাপ বানানোর কাজ শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, দফতরের অধীনস্থ সংস্থা ওয়েবেল টেকনোলজি লিমিটেড এই অ্যাপ বানাচ্ছে।
এই অ্যাপের মাধ্যমে শুধু হাতি নয়, অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের আক্রমণের ফলে ফসল নষ্ট হলেও ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করা যাবে। অ্যাপে কোনও জটিলতা থাকবে না। এই অ্যাপে রেজিস্ট্রেশনের জন্য সরকারি পরিচয় পত্র এবং আধার কার্ড নম্বর দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির ছবি তুলে তাতে পাঠাতে হবে। সঠিক অবস্থান বুঝতে জিও লোকেশন ব্যবহার করবে দফতর।
সূত্রের খবর, সবচেয়ে বেশি ফসল নষ্টের ঘটনা ঘটে ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং বীরভূম জেলায়। এছাড়াও উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার জেলায় হাতির হানায় বিপুল পরিমাণ ফসল নষ্ট হয়। এবিষয়ে আধিকারিকদের বক্তব্য, মোবাইল অ্যাপ চালু হলে আবেদনের জটিলতা থাকবে না।