কোথাও পরিকাঠামোগত খামতি, আবার কোথাও নির্দেশ সত্ত্বেও চালু করা হয়নি শিক্ষক চিকিৎসকদের জন্য বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা। এনিয়ে সম্প্রতি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি) দেশের কয়েকশো মেডিক্যাল কলেজকে জরিমানা করেছে। যার মধ্যে রয়েছে রাজ্যের ৭ টি মেডিক্যাল কলেজ। সেক্ষেত্রে কোনওটিকে ২৪ লক্ষ আবার কোনওটিকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই অবস্থায় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনকে চিঠি দিল স্বাস্থ্য দফতর।
আরও পড়ুন: পরিকাঠামোগত ঘাটতি বাংলার সাত সহ দেশের বহু মেডিক্যাল কলেজে, জরিমানা করল NMC
দেশের চিকিৎসা শিক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা হল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। ফলে এই অবস্থায় তারা মেডিক্যাল কলেজগুলিকে এভাবে আর্থিক জরিমানা করতে পারে কিনা তাই নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। তাছাড়া রাজ্য জরিমানা দেবে কিনা তাই নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল চিকিৎসক মহলে। তবে সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার এখনই জরিমানার টাকা মেটাতে চাইছে না। তাদের বক্তব্য, বর্তমানে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বায়োমেট্রিক বসানো সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। আগের অবস্থা আর নেই। তাছাড়া শিক্ষক চিকিৎসকদের হাজির ও বর্তমানে সন্তোষজনক অবস্থায় আছে। তাই সবকিছু খতিয়ে দেখার পর সিদ্ধান্ত যাতে পুনর্বিবেচনা করা হয় সে বিষয়ে আর্জি জানিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, জরিমানা এখনই মেটানো হবে না। চিঠি পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতির কথা জানানো হয়েছে। তারপর কী সিদ্ধান্ত হয় সেটা দেখা যাবে।
প্রসঙ্গত, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি) মেডিক্যাল কলেজগুলিকে বার বার নির্দেশ দিয়েছিল, ন্যূনতম পরিকাঠামোগত যে মাপকাঠি রয়েছে তা শোধরাতে হবে। তারপরেও দেখা যায়, একাধিক মেডিক্যাল কলেজে তা শোধরানো হয়নি। তার মধ্যে যেমন রয়েছে অপর্যাপ্ত ইন্ডোর বেড, ডাক্তারি ও রোগ নির্ণায়ক নানা যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির অভাব, অপর্যাপ্ত ক্লাসরুমের সংখ্যা। পাশাপাশি শিক্ষক চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির বিষয়টিও রয়েছে। তার জন্য দেশের একাধিক মেডিক্যাল কলেজের পাশপাশি রাজ্যের কলেজগুলিতেও বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু করার নির্দেশ দিয়েছিল মেডিক্যাল কমিশন। কিন্তু, তা চালু করতে দেরি হওয়ায় রাজ্যের ৭টি মেডিক্যাল কলেজকে জরিমানা করা হয়।
বাংলায় যে ৭টি মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে এই ঘাটতির অভিযোগে উঠেছে তার মধ্যে রয়েছে- এসএসকেএম, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ। এই সমস্ত হাসপাতালগুলিকে যথাক্রমে ১৮ লক্ষ, ২০ লক্ষ, ২৪ লক্ষ, ৫ লক্ষ, ১৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজকে ১২ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। আধিকারিকদের বক্তব্য, গত বছর থেকে লাগাতার রাজ্য সরকারকে এ বিষয়ে বায়োমেট্রিক চালু করার জন্য একাধিক চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ফোনে এবং ভিডিয়ো কনফারেন্সেও তাদের তারা দেওয়া হয়েছে। তারপরেও এই কাজে দেরি হয়েছে ।