পশ্চিমবঙ্গের ‘জ্বলন্ত’ ইস্যু নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রিসভার বৈঠক করুন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এমনই নির্দেশ দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবনের সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের (স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া) ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের ভাগ্যনির্ধারণের জন্যও রাজ্যপাল বার্তা দিয়েছেন নবান্নকে। তিনি জানিয়েছেন যে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিনীতকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে। সেই পরিস্থিতিতে তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাজ্যপাল নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্র উদ্ধৃত করে ওই সংবাদসংস্থার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ রাজ্যপালের
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সূত্র বলেছেন যে 'মৃত মহিলা চিকিৎসকের বিচারের জন্য সাধারণ মানুষ যে দাবি জানিয়েছেন, সেটা নিয়ে আলোচনা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল বোস।' সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যপাল মনে করেন যে রাজ্য সরকার নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না। আর বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে পারে না বলে মনে করেন রাজ্যপাল।
‘সংবিধান ও আইনের মধ্যে থেকে রাজ্যের কাজ করা উচিত’
তারইমধ্যে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীতকে সরিয়ে দেওয়ার যে দাবি উঠেছে, তা নিয়েও রাজ্যপাল নবান্নকে বার্তা দিয়েছেন বলে সূত্র উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সূত্র বলেছেন যে ‘রাজ্যপালের মতে, সংবিধান এবং আইনের মধ্যে থেকে রাজ্যের কাজ করা উচিত।’ সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যপালের এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধান করা উচিত রাজ্য সরকারের।
তরুণী চিকিৎসকের মায়ের প্রতিক্রিয়া
তারইমধ্যে রবিবার তরুণী চিকিৎসকের মা বলেন, ‘আমি কী বলব, আমি ভাষাই হারিয়ে ফেলেছি। আমার মেয়েটা ছোটো থেকেই….মানে খুব ছোট যখন, তখন থেকেই ওর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। (বলত যে) আমি ডাক্তার হব না। অনেক লোকের সেবা করব। আর সেই সেবা করতে গিয়ে আমার মেয়েটা আরজি করে বলিদান হয়ে গিয়েছে। একজন অন-ডিউটি ডাক্তার এরকম নৃশংসভাবে, চরম অত্যাচারিত হয়ে (হয়তো) যখন মা-মা করে কাঁদছিল, তখন সেই কান্নাটা আমার কাছে ধ্বনিত হয়। রোজ এখন আমি ভাবি, কত কষ্টে, কত কষ্টে আমার মেয়েটা চলে গিয়েছে।’
সেইসঙ্গে তাঁর মেয়ের জন্য বিশ্বজুড়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ যেভাবে রাস্তায় নামছেন, তাঁরাই পরিবারের ‘শক্তি’ বলে জানিয়েছেন তরুণী চিকিৎসকের মা। প্রশাসন, পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘এই যে সকলে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, দেশে-বিদেশে এই যে সকলে সোচ্চার হয়েছেন বিচার চাই, বিচার চাই বলে, এটা আমাদের সবথেকে বড় বল। এছাড়া (কিছু নেই)।’