ডাক্তারি পরীক্ষায় এবার যাতে কেউ ঘাড়ও ঘোরাতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হবে। এমনই আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন তুলে নেওয়ার আর্জি জানানোর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, মেডিক্যাল এক্সামিনেশনে (পরীক্ষা) যাতে কোনওরকম কেউ এদিকে-ওদিকে ঘাড় ঘোরাতে না পারেন। তারা যেন সঠিকভাবে পড়াশোনা করেন। সঠিকভাবে পরীক্ষা দিতে পারেন। সেজন্য প্রয়োজনে হলে আমরা আরও কিছু সিস্টেম চালু করব। যে সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে আপনারাও ভালো ডাক্তার হয়ে বেরোতে পারবেন।’ সেইসঙ্গে তিনি বলেন, 'ডাক্তারকে তো বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না। ডাক্তারকে তৈরি করতে হয়।'
গণটোকাটুকি, প্রশ্নপত্র বিলি- উঠেছে বিভিন্ন অভিযোগ
আর মুখ্যমন্ত্রী এমন একটা সময় সেই বার্তাটা দিয়েছেন, যখন রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে যে রীতিমতো একটা চক্র কাজ হচ্ছে। সেই চক্রের কারণে পরীক্ষার কেন্দ্রে লাগামছাড়া গণটোকাটুকি হয়েছে। পরীক্ষার আগেই হাতে চলে এসেছে প্রশ্নপত্র। বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নম্বর। খাতায় যে নম্বর পেয়েছেন পরীক্ষার্থী, সেটা ট্যাবুলেশনে তোলার সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার যাঁরা সেইসব ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন, তাঁদের নম্বর কমিয়ে দেওয়ার মতোও ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপ সদর্থক, বার্তা পুলস্ত্যের
আর সেই পরিপ্রেক্ষিতে মমতা যে বার্তা দিলেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারের অন্যতন ‘মুখ’ পুলস্ত্য আচার্য (আমরণ অনশন করছিলেন, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন, আজ ছাড়া পেলেন) বলেন, ‘আজ মুখ্যমন্ত্রী একটা খুব সদর্থক কথা বলেছেন যে ডাক্তারি পরীক্ষায় যাতে কেউ ঘাড় ঘোরাতে না পারে, সেটা তিনি দেখবেন। আজ এই জায়গাটি আসছে কেন?'
‘শুধু ঘাড় ঘোরানো নয়, প্রশ্নপত্রও পেয়ে গিয়েছে মুষ্টিমেয় লোকজন’
সেই প্রশ্নের উত্তর নিজেই দিয়েছেন পুলস্ত্য। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তিনি বলেন, 'আজ এই জায়গাটি আসছে কারণ গত কয়েক বছরে ডাক্তারি পরীক্ষায় শুধু ঘাড় ঘোরানোর সুযোগ নয়, প্রশ্নপত্র পেয়েও যাচ্ছিল (কেউ-কেউ)। মুষ্টিমেয় কয়েকজন প্রশ্নপত্র পেয়েছে। তারাই অনার্স পেয়েছে। তারাই গোল্ড মেডেল পেয়েছে। তারাই ডাক্তার হয়েছে। তারাই থ্রেট কালচারে যুক্ত থেকেছে। তারাই ওতপ্রোতভাবে জড়িত থেকেছে। তারাই হয়তো দেখা গেল যে কোনও প্রিন্সিপালের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।’
আরও পড়ুন: Marital Rape Case Hearing in SC: ‘স্বামী বা অচেনা লোক- যেই ধর্ষণ করুক, সেটার পরিণতি তো আলাদা হয় না’