দু দফা দাবিতে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগমের জলপথ শাখার অস্থায়ী কর্মীরা। যারফলে স্বাভাবিকভাবেই যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়ার আশঙ্কা ছিল। অবশেষে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল অস্থায়ী শ্রমিক সংগঠনগুলি। রাজ্য সরকারের তরফে তাদের দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়ার পরেই এই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখেন কর্মীরা। এরফলে দুর্ভোগে পড়তে হল না যাত্রীদের।
আরও পড়ুন: বাতিল করা হয়েছে জলপথ পরিবহণ, টানা দু’দিন মিলবে না ফেরি পরিষেবা, ‘দানা’ আতঙ্ক
মূলত দুটি দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল শ্রমিক সংগঠনগুলি। তাদের বক্তব্য, সড়ক পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ করা হয়েছে। কিন্তু, জলপথের সঙ্গে যুক্ত অস্থায়ী কর্মীদের এখনও বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। তাই অবিলম্বে তাদের স্থায়ী করতে হবে। অবশ্যই সেটা ঠিকাদারের মাধ্যমে নয়। আর দ্বিতীয়ত হল সরকারের ঘোষিত যে বেতন কাঠামো রয়েছে সেই বেতন কাঠামো তাদের ক্ষেত্রেও চালু করতে হবে। মূলত এই দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছিল সংগঠনগুলি। কিন্তু, অভিযোগ রাজ্য সরকার তাদের দাবিতে আমল দিচ্ছিল না।
অস্থায়ী শ্রমিকদের তরফে বলা হয়েছিল, তারা বহুবার রাজ্যের ভূতল পরিবহণ দফতরে জানিয়েও কোনও রকম সদুত্তর পাননি । তাই বাধ্য হয়েই তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ভেসেল পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ।তারা আরও জানিয়েছিলেন, তাদের দাবি যতক্ষণ না-পর্যন্ত রাজ্যের পরিবহণ দফতর মানছে, ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে। সোমবার থেকে এই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শ্রমিক সংগঠনগুলি।এরপরেই নড়েচড়ে বসে রাজ্য সরকার। তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীও তাঁদের সমস্ত দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। শেষে আশ্বাস পেয়ে শ্রমিকরা কর্মবিরতি স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, এদিন শ্রমিকরা সাগর থেকে শুরু করে কলকাতা মিলেনিয়াম পার্ক, দুলদুলি, বেলুড়, দক্ষিণেশ্বরে ভেসেল পরিষেবা বন্ধের কথা ঘোষণা করেছিলেন। প্রতিদিন এই জলপথগুলিতে প্রচুর মানুষ ভেসেলে করে যাতায়াত করেন। তাছাড়া, সাগরদ্বীপ থেকে কাকদ্বীপ যাওয়ার জন্য কচুবেড়িয়া ঘাট থেকে ভেসেলে লট নম্বর আটে যেতে হয় ৷ জেলার মূল স্থলভাগের সঙ্গে সাগরদ্বীপের একমাত্র যোগসূত্র হল এই ভেসেল পরিষেবা। ফলে, তা বন্ধ হয়ে গেলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হত যাত্রীদের।
মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরাও তাঁদের যাবতীয় দাবি দাওয়া খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। এইসব আশ্বাসের পর সোমবার থেকে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগমের জলপথ শাখার অস্থায়ী শ্রমিক সংগঠনগুলি। তাতে খুশি যাত্রীরা।