২০২৩ সালের ঘটনা। নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এরপর ধরা পড়েছিল সেই দুষ্কৃতী। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে সেই দোষী ব্যক্তির মহম্মদ আব্বাসকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল শিলিগুড়ি মহকুমা আদালত। কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছিল পরিবার। এদিকে মঙ্গলবার গোটা দেশের পাশাপাশি দার্জিলিংয়ের সেই নির্যাতিতার মায়ের নজর ছিল টিভির পর্দার দিকে। আরজি কর কাণ্ডে সঞ্জয় রায়কে গত শনিবার দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এরপর সোমবার তার সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল শিয়ালদা আদালত।
অন্যদিকে হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও এক শিশু কন্যা ও এক বালিকাকে ধর্ষণ খুনে ফাঁসির সাজা হয়েছে দুই অপরাধীর। কিন্তু সঞ্জয়ের বেলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড। এদিকে হুগলি কিংবা দক্ষিণ ২৪ পরগনা দুটি ঘটনাতেই ফাঁসির সাজা হয়েছিল। এদিকে সেই দুই পরিবারের নজর ছিল টিভির দিকে। সঞ্জয়ের কী সাজা হয় সেটা জানার জন্য় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। কিন্তু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশে একেবারেই খুশি নন তারা। আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে হুগলির শিশুর মা বলেন, ভেবেছিলাম ফাঁসি হবে। হল না। আমরা খুশি নই। শিশুটির বাবা বলেন, আরজিকর কাণ্ডে বিচারের দাবিতে আমিও পথে নেমেছিলাম। পরে আমার মেয়ের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটে। মেয়ের মামলার রায়ে আমরা খুশি। কিন্তু আজকের রায়ে তা হতে পারছি না। নির্যাতিতা নিহত ডাক্তারের মায়ের পাশে ছিলাম আছি থাকব। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৃত কন্যার মা জানিয়েছেন, মেয়ের জন্য বিচার পেয়েছি। ডাক্তারদিদির জন্য একই রকম বিচার চেয়েছিলাম। এই ক্ষেত্রেও ফাঁসি হলেই ভালো হত। খবর ওই সংবাদমাধ্য়মের প্রতিবেদন অনুসারে।
তবে কেবলমাত্র ওই মৃত কন্য়াদের পরিবারই নয়, বাংলার একাধিক পরিবার যেন মনে মনে সঞ্জয়ের ফাঁসি হোক বলেই চাইছিলেন। অনেকেই হতাশ। তবুও বিচার ব্যবস্থার উপর পুরোমাত্রায় ভরসা রয়েছে তাঁদের। তাঁরা চান আরজি করে খুন ধর্ষণের মামলায় আরও যারা জড়িত তাদের কঠোরতম শাস্তি হোক।
বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন, মৃত্যুদণ্ড চেয়ে এবার হাইকোর্টে যাব।
মমতা লিখেছেন, 'আরজি করে জুনিয়র ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় আজকের রায়ে বলা হল এটা বিরলের মধ্য়ে বিরলতম ঘটনা নয়। আমি সত্যিই হতবাক।
আমার যেটুকু ধারণা এটা বিরলের মধ্য়ে বিরলতম ঘটনা যেটা মৃত্যুদণ্ড দাবি করে। কীভাবে এই বিচারে উপসংহার টানা হল যে এটা বিরলের মধ্য়ে বিরলতম ঘটনা নয়?এই সংবেদনশীল মামলায় আমরা মৃত্য়ুদণ্ডের জন্য আবেদন করব।
সম্প্রচি গত তিন চার মাসে আমরা ক্য়াপিটাল অথবা সবথেকে বেশি শাস্তি নিশ্চিত করতে পেরেছি এই ধরনের অপরাধে। তাহলে কেন এই মামলায় ক্য়াপিটাল পানিসমেন্টে নয়?
আমি দৃঢ়তার সঙ্গে অনুভব করছি এরকম নৃশংস ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড দরকার। আমরা দোষীর মৃত্যুদণ্ডের জন্য় হাইকোর্টে আবেদন করব। '