গত কয়েকদিন ধরে স্বাস্থ্যভবনের সামনের চিত্রটাই বদলে গিয়েছে। চারপাশের দেওয়ালে খালি স্লোগান আর স্লোগান। আর মঙ্গলবার সকাল থেকেই স্বাস্থ্যভবনের কাছের ধর্নাস্থলে অনেকেরই নজর ছিল সুপ্রিম কোর্টের দিকে। তার মধ্য়েই স্লোগান উঠছে জাস্টিস ফর আরজি কর। কেউ গাইছেন রবীন্দ্র সংগীত। কারোর গলায় গণসংগীত। সোমবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে আলোচনার পরেই জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়ে দিয়েছিলেন মিটিংয়ে যে আশ্বাস মিলেছে তা বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কর্মবিরতি, অবস্থান বিক্ষোভ থেকে সরছেন না।
প্রচুর সাধারণ মানুষ সকাল থেকেই আসছিলেন ধর্নাস্থলের দিকে। কারোর হাতে খাবারের প্যাকেট। কারোর হাতে প্লাকার্ড। অনেকেরই প্রশ্ন এবার কি অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি উঠে যাবে? এমন আন্দোলন তো আগে কোনও দিন দেখা যায়নি। এর মধ্যেই একটা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বাংলার রাজনীতিতে কি নতুন কোনও দিশা দেখাবে জুনিয়র ডাক্তারদের এই আন্দোলন?
ন্যায় বিচারের দাবিতে, দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য প্রশাসনের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন চিকিৎসকরা। আর তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন অগণিত সাধারণ মানুষ। এই ছবি শেষ কবে দেখেছে বাংলা?
কলকাতায় এর আগে বহু মিছিল হয়েছে। বহু মহামিছিল হয়েছে। কিন্তু এভাবে দলে দলে মানুষ মিছিল খুঁজছেন প্রতিবাদে শামিল হওয়ার জন্য এই ছবি শেষ কবে দেখেছে বাংলা?
যাদবপুর এলাকা থেকে এসেছিলেন কয়েকজন মহিলা। বার বার তাঁরা বলতে থাকেন, আমরা আগে কোনওদিন এমন আন্দোলন দেখিনি। উচ্চবিত্ত, মধ্য়বিত্ত শ্রেণির লোকজন কেবলমাত্র আসছেন এমনটা নয়। একেবারে নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষও বলছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ছেড়ে দিতে হলে দেব। কিন্তু চিকিৎসকদের আন্দোলনের পাশ থেকে সরব না।
এবার প্রশ্ন এত আবেগ, সাধারণ মানুষের এত সমর্থন, এসব নিয়ে কী বলছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা?
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলায় মুখ খুলেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজের এক এমবিবিএস পড়ুয়া বলেন, আমরা ডাক্তারি পড়ছি। আগামী দিনে রাজনীতিতে নামার কোনও ইচ্ছা নেই। ডাক্তারিটাই ভালো করে করতে চাই।
আগামী দিনে কোনও চাপ আসতে পারে বা প্রতিহিংসামূলক কোনও আচরণ সরকার করতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন?
এক জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, এখনও অন্তত আমার উপর চাপ কিছু আসেনি। তবে এটাই বিশ্বাস করব আগামী দিনে আমাদের উপর প্রতিহিংসামূলক কোনও আচরণ সরকার করবে না। ভয় কে জয় করার চেষ্টা করছি, আন্দোলন ছেড়ে বের হতে চাই না। জাস্টিস না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।